ফ্যাটি লিভার একটি নীরব ঘাতক! এভাবেই এটি নীরবে ক্ষতি করে। এটি কীভাবে প্রতিরোধ করবেন তা শিখুন – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
ফ্যাটি লিভার বর্তমানে একটি সাধারণ অথচ মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা। অনেক ক্ষেত্রেই এই রোগ চুপিসারে বাড়তে থাকে এবং যখন ধরা পড়ে, তখন পরিস্থিতি বেশ জটিল হয়ে যায়।
আমাদের লিভারে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চর্বি জমলে তাকে ফ্যাটি লিভার বলা হয়। যদি এই চর্বির পরিমাণ লিভারের মোট ওজনের ৫-১০% এর বেশি হয়ে যায়, তবে তা ফ্যাটি লিভার হিসেবে চিহ্নিত হয়। আয়ুর্বেদে একে ‘যকৃত-মেদোরোগ’ বলা হয়, যেখানে লিভারের কার্যকারিতা দুর্বল হয়ে যায় এবং চর্বি ঠিকমতো হজম হয় না।
কেন হয় ফ্যাটি লিভার?
অতিরিক্ত মদ্যপান, অতিরিক্ত ওজন, অস্বাস্থ্যকর খাবার (যেমন বেশি চর্বিযুক্ত, ভাজাভুজি বা ফাস্ট ফুড), ডায়াবেটিস, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার, মানসিক চাপ এবং অনিয়মিত জীবনযাপন ফ্যাটি লিভারের প্রধান কারণ। এই কারণগুলো লিভারের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে এবং দেহের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায়।
নীরব ঘাতক ফ্যাটি লিভার
ফ্যাটি লিভারকে একটি নীরব ঘাতক বলা হয়, কারণ এটি ধীরে ধীরে গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। সময়মতো এর লক্ষণ চিহ্নিত করতে পারলে এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। নিয়মিত শরীরচর্চা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং চাপমুক্ত জীবনযাপন ফ্যাটি লিভার থেকে বাঁচতে সাহায্য করে এবং লিভারের কার্যকারিতা ঠিক রাখে।
কিছু ঘরোয়া প্রতিকার
ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি বেশ কার্যকর। যেমন, আমলকি লিভারকে পরিষ্কার করে এবং হজম শক্তি বাড়ায়। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে আমলকির রস পান করা উপকারী। হলুদ লিভারের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। রাতে ঘুমানোর আগে উষ্ণ দুধে হলুদ মিশিয়ে পান করা যেতে পারে। ত্রিফলা চূর্ণ লিভার পরিষ্কার রাখতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া, নিম এবং গিলয়ের মতো ভেষজ লিভারকে টক্সিনমুক্ত করে। পেঁপে এবং রসুন লিভারের ওপর চাপ কমায় এবং ফ্যাটি লিভারের জন্য উপকারী।
জীবনযাত্রায় পরিবর্তন জরুরি
ফ্যাটি লিভার থেকে বাঁচতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা জরুরি। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, যোগব্যায়াম এবং ধ্যান করা উচিত। ধূমপান ও মদ্যপান সম্পূর্ণ ত্যাগ করুন। তৈলাক্ত, মশলাদার এবং জাঙ্ক ফুড খাওয়া কমান। মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান ও প্রাণায়াম করুন। খাদ্যতালিকায় সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, গোটা শস্য এবং প্রোটিন যুক্ত খাবার রাখুন। ঠাণ্ডা পানীয় ও প্যাকেটজাত জুস এড়িয়ে চলুন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন।