মৃত ব্যক্তির ৩ জিনিস ভুলেও ব্যবহার করবেন না! ধ্বংস ডেকে আনে আপনার জীবনে – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
জন্ম ও মৃত্যু প্রকৃতির চিরন্তন সত্য। যে পৃথিবীতে এসেছে, তাকে একদিন না একদিন এই পৃথিবী ছেড়ে যেতেই হবে। প্রতিটি ধর্মেই জন্ম ও মৃত্যু সংক্রান্ত কিছু বিশেষ রীতি ও বিশ্বাস প্রচলিত আছে। যখন কোনো মানুষ মারা যান, তখন তাঁর আত্মার শান্তির জন্য নানা ধরনের আচার-অনুষ্ঠান করা হয়। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, মৃত্যুর পরেও কিছু জিনিসের প্রতি মানুষের মায়া থেকে যায়। তাই বলা হয়, মৃত ব্যক্তির কিছু জিনিস ব্যবহার করা উচিত নয়। এর পেছনে কী রহস্য লুকিয়ে আছে, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
১. ব্যক্তিগত পোশাক ও জিনিসপত্র
মৃত ব্যক্তির পোশাক, গয়না এবং ঘড়ি ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। মনে করা হয়, এই জিনিসগুলোর সঙ্গে ব্যক্তির আবেগ ও শক্তি জড়িয়ে থাকে। তাই মৃত ব্যক্তির পোশাক, বিশেষ করে অন্তর্বাস পুড়িয়ে বা দান করে দেওয়ার রীতি রয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এই পোশাকগুলোতে শোকের নেতিবাচক শক্তি থাকে। একই সঙ্গে, স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও পুরোনো কাপড় বিশেষত অন্তর্বাস থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। ঘড়ি ব্যবহার না করার কারণ হলো, ব্যক্তির সময় মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই থমকে যায়।
২. ব্যক্তিগত ব্যবহার্য জিনিস
মৃত ব্যক্তির ব্যবহৃত বিছানা, বালিশ বা চাদর সাধারণত পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। হিন্দু রীতি অনুযায়ী, এগুলি ধুয়ে পরিষ্কার করে তবেই ব্যবহার করা হয় অথবা অনেক সময় দান করে দেওয়া হয়। এছাড়া চিরুনি, ব্রাশ ও রেজার পুরোপুরি ব্যক্তিগত জিনিস। এগুলোতে মৃত ব্যক্তির চুল, ত্বকের কণা বা ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা সংক্রমণের কারণ হতে পারে। তাই এগুলো হয় ফেলে দেওয়া বা পুড়িয়ে দেওয়া উচিত।
৩. অন্যান্য ব্যক্তিগত জিনিস
মৃত ব্যক্তির জুতো-চপ্পল সাধারণত অন্য কেউ ব্যবহার করেন না। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এগুলো সাধারণত গরিবদের দান করা হয়। একইভাবে, তাবিজ, মালা, রুদ্রাক্ষ বা কড়ার মতো ব্যক্তিগত ধর্মীয় জিনিসপত্র ব্যবহারের আগে পবিত্র করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে এগুলি পবিত্র স্থানে রেখে দেওয়া হয়।
মৃত ব্যক্তির ব্যক্তিগত ওষুধপত্র ও মেডিকেল সরঞ্জাম অবিলম্বে সরিয়ে ফেলতে হয়। মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। চশমা বা হুইলচেয়ারের মতো মেডিকেল সরঞ্জাম পরিষ্কার করে কোনো অভাবীকে দান করা যেতে পারে। মোবাইল ফোন, ঘড়ি বা পার্স ব্যবহারের আগে ভালো করে পরিষ্কার করা উচিত। পরিবারের অনেক সদস্য এই ধরনের জিনিস কিছু দিন আলাদা করে রেখে দেন, তারপর কাউকে দেন। মৃত ব্যক্তি যে বাসনপত্র ব্যবহার করতেন, সেগুলো ধুয়ে পবিত্র করার পর ব্যবহার করা হয়। অনেকে এগুলো দান করে দেন অথবা গঙ্গা জল ছিটিয়ে শুদ্ধ করে ব্যবহার করেন।
মনে রাখবেন, পরিচ্ছন্নতা সবচেয়ে জরুরি। সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সব জিনিস ভালো করে পরিষ্কার করা উচিত। ধর্মীয় বিশ্বাস ও পারিবারিক ঐতিহ্য মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে, মৃত ব্যক্তির ব্যবহৃত সামগ্রী অভাবীদের দান করলে পুণ্য লাভ হয়।