রামপুরহাটে নিখোঁজ ছাত্রীর বাড়িতে কেন যেতে হলো শতাব্দী রায়কে? সাংসদকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মা, তুললেন ভয়াবহ অভিযোগ – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

রামপুরহাটে খুন হওয়া আদিবাসী ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন সাংসদ শতাব্দী রায়। সোমবার সকালে নিহত ছাত্রীর বাড়িতে পৌঁছাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা। সেই দৃশ্য দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি সাংসদও। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে তিনি অভিযুক্তের ‘প্রকাশ্যে ফাঁসি’র দাবি তোলেন। শতাব্দী বলেন, এই সমাজে ওই অভিযুক্তের বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই।

সোমবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ স্বামী ও স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের নিয়ে নিহত ছাত্রীর বাড়িতে যান শতাব্দী রায়। সাংসদকে দেখেই বাড়ির ভেতর থেকে বেরিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা। তিনি হাউহাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “কী এমন দোষ করেছিল আমার মেয়ে? কেন তাকে এভাবে টুকরো টুকরো করে মারা হলো? এখনও মেয়ের দুটি হাতও খুঁজে পাওয়া যায়নি।” এই মর্মান্তিক কথা শুনে সাংসদের চোখেও জল চলে আসে।

পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নিহত ছাত্রীর ঠাকুরমা বলেন, “১৫ দিনের মধ্যে যদি অভিযুক্তের ফাঁসি না হয়, তাহলে তাকে আমাদের হাতে ছেড়ে দিন। ১৫ দিন দেখব, তারপর তীর-ধনুক নিয়ে রাস্তায় নামব।” জবাবে শতাব্দী বলেন, “আইনের অনেক প্রক্রিয়া আছে। ১৫ দিনের মধ্যে ফাঁসি হবে এমনটা ভাববেন না। তবে আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব, যাতে যত দ্রুত সম্ভব সুবিচার পাওয়া যায়।”

মৃতার জামাইবাবু পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে পাঁচদিন আটকে রাখার পর কেন ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল? কারা তাকে ছাড়িয়েছিল, তাদেরও যাবজ্জীবন সাজা হওয়া উচিত। জামাইবাবু আরও বলেন, “২৮শে আগস্ট অভিযোগ জানানোর পর পুলিশ তৎপর হলে হয়তো মেয়েটি বেঁচে থাকত। পুলিশ টাকার বিনিময়ে চুপ করে ছিল।” তিনি দাবি করেন, ১৫ দিনের মধ্যে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়ার কাগজপত্র ও সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ না করলে তারা আন্দোলনে নামবেন। এই প্রসঙ্গে শতাব্দী এসপি-র সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দেন।

সংবাদমাধ্যমের সামনে সাংসদ শতাব্দী রায় বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং নৃশংস ঘটনা। অভিযুক্ত একজন সাইকোপ্যাথিক ক্রিমিনাল। তিনি ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন, অভিযুক্তের প্রকাশ্যে ফাঁসি হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, পরিবারটি অত্যন্ত শোকে থাকায় এমন দাবি জানাচ্ছে। এই শিক্ষককে কারা থানা থেকে ছাড়িয়েছিল তা তিনি জানেন না, তবে যেই থাকুক, অন্যায়ের সঙ্গে কোনো আপস হবে না।

এদিকে, পুলিশ এখনও ছাত্রীর দেহের বাকি অংশ খুঁজে পায়নি। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য এদিন নিহত ছাত্রীর বাবা-মাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। গোটা এলাকা জুড়ে পুলিশ এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *