ফৌজদারি অপরাধের তালিকা থেকে বাদ মানহানি! সওয়াল সুপ্রিম কোর্টের – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
নয়াদিল্লি: মানহানিকে কি আর ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হবে না? সোমবার একটি মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্যে এই জল্পনা তীব্র হয়েছে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা এই আইনকে এবার ফৌজদারি অপরাধের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সময় এসেছে। এই আইনকে প্রায়শই রাজনৈতিক দল ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ‘প্রতিশোধ’ নেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আসছে বলে পর্যবেক্ষণ করেছে আদালত।
এর আগে যদিও সুপ্রিম কোর্ট মানহানির ফৌজদারি আইনের সাংবিধানিক বৈধতা বহাল রেখেছিল। তখন আদালত জানিয়েছিল, মর্যাদার অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকারের অংশ। কিন্তু এবার সেই অবস্থান থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিল শীর্ষ আদালত। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩৫৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী মানহানিকে ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। পুরোনো ভারতীয় দণ্ডবিধিতেও একই ব্যবস্থা ছিল।
ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০১৬ সালে। জেএনইউয়ের অধ্যাপিকা অমৃতা সিং একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যম ও তার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর দাবি ছিল, সংবাদমাধ্যমটি তাঁকে নিয়ে ভিত্তিহীন খবর প্রকাশ করে তাঁর সম্মানহানি করেছে। এই মামলাটি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।
বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ ও বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলাকালীন মানহানি সংক্রান্ত ফৌজদারি মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে এই ধরনের মামলার প্রবণতা দেখা যায়।
অধ্যাপিকা অমৃতা সিংয়ের অভিযোগ, ওই সংবাদমাধ্যমটি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে যেখানে বলা হয়েছিল তিনি এবং কয়েকজন অধ্যাপক মিলে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছেন, যাতে জেএনইউকে ‘মধুচক্রের ঘাঁটি’ বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি রিপোর্টে কিছু অধ্যাপক বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদত দিচ্ছেন বলেও দাবি করা হয়। এই খবর প্রকাশের পরই অধ্যাপিকা মামলা করেন। প্রথমে নিম্ন আদালত এবং পরে দিল্লি হাইকোর্ট ওই সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করে। এরপর মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে গড়ায়।
এদিন শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট সব পক্ষকে তাদের অবস্থান জানাতে বলেছে। এই মামলার রায় শেষ পর্যন্ত কী হয়, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে।