৫০ পেরোলেই সাবধান! পুরুষদের এই ৫ লক্ষণ হতে পারে মারাত্মক রোগের ইঙ্গিত, অবহেলা করলেই বিপদ – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
প্রোস্টেট ক্যান্সার পুরুষদের একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা, যা সাধারণত ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। প্রোস্টেট গ্রন্থিতে অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধির ফলে এই ক্যান্সার হয়। প্রোস্টেট গ্রন্থিটি মূত্রথলির নিচে অবস্থিত, যা শুক্রাণু উৎপাদনে সহায়তা করে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রোস্টেট ক্যান্সার ধীরে ধীরে বাড়ে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে এর কোনো লক্ষণ ধরা পড়ে না। তাই সময়মতো এর লক্ষণগুলো জানা থাকলে দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয়, যা জীবন বাঁচানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে প্রোস্টেট ক্যান্সারের কিছু প্রাথমিক লক্ষণ তুলে ধরা হলো।
১. প্রস্রাবে পরিবর্তন
প্রোস্টেট ক্যান্সার হলে প্রস্রাবের অভ্যাসে পরিবর্তন আসতে পারে। গ্রন্থি বড় হয়ে গেলে তা মূত্রনালীর ওপর চাপ সৃষ্টি করে, যার ফলে কিছু সমস্যা দেখা যায়। যেমন:
- প্রস্রাব শুরু করতে বা বন্ধ করতে অসুবিধা হওয়া।
- প্রস্রাবের ধারা দুর্বল বা থেমে থেমে আসা।
- প্রস্রাবের শেষে ফোঁটা ফোঁটা পড়া।
- মনে হওয়া যে মূত্রথলি সম্পূর্ণ খালি হয়নি।
- রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।
এই লক্ষণগুলো দেখলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি, কারণ সাধারণ প্রোস্টেট বৃদ্ধির লক্ষণ এবং ক্যান্সারের লক্ষণ প্রায় একই ধরনের হয়।
২. প্রস্রাব বা বীর্যে রক্ত
যদি প্রস্রাব বা বীর্যে রক্ত দেখা যায়, তবে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এটি প্রোস্টেট ক্যান্সার বা এই সম্পর্কিত অন্য কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে। এই অবস্থাকে যথাক্রমে হেমাটুরিয়া এবং হেমাটোস্পার্মিয়া বলা হয়।
৩. যৌন ক্ষমতা হ্রাস ও ব্যথাযুক্ত বীর্যপাত
প্রোস্টেট ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে যৌন সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গোত্থানে সমস্যা এবং বীর্যপাতের সময় ব্যথা অন্যতম। প্রোস্টেট গ্রন্থি এবং এর আশপাশের স্নায়ু যৌন কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে, আর ক্যান্সার হলে এই কার্যকলাপে প্রভাব পড়ে।
৪. পিঠ বা তলপেটে ব্যথা
কিছু রোগীর ক্ষেত্রে তলপেট, পিঠ, কোমর বা উরুতে একটানা বা থেমে থেমে ব্যথা হতে পারে। এটিও প্রোস্টেট ক্যান্সারের একটি প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী বা ঘন ঘন ব্যথা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
৫. রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব
প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হওয়ার কারণে মূত্রথলির ওপর চাপ সৃষ্টি হয়, যার ফলে রাতে বারবার প্রস্রাবের বেগ আসে। এটি ঘুমের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
পিএসএ রক্ত পরীক্ষার গুরুত্ব
পিএসএ (প্রোস্টেট-স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন) রক্ত পরীক্ষা প্রোস্টেট গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একটি প্রোটিনের মাত্রা পরিমাপ করে। পিএসএ-এর উচ্চ মাত্রা প্রোস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে, তবে এটি অন্যান্য নন-ক্যান্সারাস প্রোস্টেট সমস্যার (যেমন: গ্রন্থি বৃদ্ধি, প্রদাহ বা সংক্রমণ) কারণেও হতে পারে। এই পরীক্ষাটি লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার আগেই রোগ নির্ণয়ে সহায়তা করে। বিশেষ করে ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের এবং যাদের পরিবারে প্রোস্টেট ক্যান্সারের ইতিহাস রয়েছে, তাদের জন্য নিয়মিত পিএসএ পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি।