পাক ক্রিকেটকে বিদায় ঘণ্টা, শ্রীলঙ্কার কাছে হারলেই এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে যাবে পাকিস্তান! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

মাঠের বাইরের নাটক, মাঠের ভেতরের ব্যর্থতা—সব মিলিয়ে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের কপাল পুড়ছে। বাইশ গজের বাস্তব বলছে, সুপার ফোরে ভারতের কাছে লজ্জাজনক হারের পর বাবর আজমদের বিদায় ঘণ্টা প্রায় বেজে গেছে। পয়েন্ট টেবিলের একেবারে তলানিতে, সঙ্গে নেট রানরেটের এমন করুণ দশা যে, আজ শ্রীলঙ্কার কাছে হারলেই কার্যত টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাবে তারা।

পরিস্থিতিটা আসলে কেমন? ভারত ও বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই সুপার ফোরে দু’পয়েন্ট করে তুলে নিয়েছে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান, দুই দলই এখনও জয়ের মুখ দেখেনি। তবে শ্রীলঙ্কার নেট রানরেট -০.১২১ হলেও পাকিস্তানের অবস্থা আরও শোচনীয়: -০.৬৮৯! অর্থাৎ, আজকের ম্যাচে হারলে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সুপার ফোরেই শেষ হবে আফ্রিদিদের এশিয়া কাপ অভিযান।

কিন্তু কীভাবে এমন খাদের কিনারে এসে দাঁড়াল তারা? উত্তরটা লুকিয়ে আছে ভারতের বিপক্ষে গত ম্যাচের পারফরম্যান্সে। একটা সময় ৯০ রানে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে মনে হচ্ছিল, পাকিস্তান হয়তো লড়াই দেবে। কিন্তু মিডল অর্ডারের সেই চিরপরিচিত পতন আবারও দেখা গেল। ১৭২ রানের বেশি তুলতে ব্যর্থ হয় তারা। এরপর ভারতের অভিষেক শর্মার ঝোড়ো ব্যাটিং পাকিস্তানের যাবতীয় আশা শেষ করে দেয়।

বোলিংয়েও একই ছবি। শাহিন শাহ আফ্রিদির বোলিংয়ে সেই আগের ধার নেই। গ্রুপ পর্বে ছোট দলগুলোর বিরুদ্ধে আবরার আহমেদ কিছুটা কার্যকরী হলেও, ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন-আপের সামনে তিনি ছিলেন একেবারে নিষ্প্রভ।

আজকের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার অবস্থাও খুব একটা সুখের নয়। যদিও বাংলাদেশের কাছে হেরে তাদের টানা আট ম্যাচের জয়রথ থেমেছে, তবুও দলের ব্যাটিংয়ে কুশল মেন্ডিস ও কামিল মিশারা এখনও ভরসা দিচ্ছেন। দাসুন শানাকার মতো আক্রমণাত্মক ব্যাটার যেকোনো সময় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন।

শ্রীলঙ্কার বোলিংয়ের মূল শক্তি নুয়ান থুশারা। ডেথ ওভারে তার নিয়ন্ত্রিত বোলিং পাকিস্তানের ভঙ্গুর ব্যাটিং লাইন-আপের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তা ছাড়া, ব্যক্তিগত শোক কাটিয়ে দলে ফিরেছেন স্পিন অলরাউন্ডার দুনিথ ভেল্লালাগে, যা দলের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনবে।

এখানে ভারতের ভূমিকাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানকে হারিয়ে শুধু পয়েন্টই ছিনিয়ে নেয়নি সূর্যকুমাররা, তাদের নেট রানরেটও এমন তলানিতে ঠেলে দিয়েছে যে, শ্রীলঙ্কা আজ সামান্য ব্যবধানে জিতলেই ফাইনালের দিকে কয়েক কদম এগিয়ে যাবে। অর্থাৎ, পাকিস্তানের পরাজয়ে শ্রীলঙ্কার সামনে ফাইনালের দরজা খুলে যাবে।

মাঠের পারফরম্যান্সের চেয়েও বড় প্রশ্ন তৈরি করেছে মাঠের বাইরের বিতর্ক। ম্যাচ রেফারি সরানো, হাত না মেলানোর বিতর্ক, এমনকি ফখর জামানের বিতর্কিত আউট নিয়ে আইসিসির কাছে অভিযোগ—সবকিছু যেন দলের মনোসংযোগ নষ্ট করছে। অধিনায়ক সালমান আলি আঘার অপ্রস্তুত নেতৃত্ব এবং বোর্ডের অদক্ষ ব্যবস্থাপনা এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

আজকের ম্যাচটি তাই পাকিস্তানের জন্য কার্যত ‘নকআউট’। ২০১৯ সাল থেকে টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কার কাছে টানা পাঁচ ম্যাচে হারের রেকর্ডও তাদের দুশ্চিন্তায় রাখবে। সেই অভিশাপ কি এবারও চলবে? উত্তরটা মিলবে আজই।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *