ভারতে কি এমন ঘটল যে আমেরিকা ও চীন চমকে উঠল! নতুন পরাশক্তি হয়ে উঠছে ভারত? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

এক সময় ভারতকে শুধুমাত্র একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গণ্য করা হতো, কিন্তু বর্তমানে বিশ্বমঞ্চে তার ক্রমশ বাড়তে থাকা প্রভাব বিশ্বের দুই পরাশক্তি আমেরিকা ও চীনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের দ্রুত অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, সামরিক আধুনিকীকরণ এবং স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি এই দুই দেশের জন্যই নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

আর্থিক প্রগতিতে উড়ান ভারতের

ভারত বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি। আর্থিক বছর ২০২৪-২৫-এ ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ৬.৫% এবং ২০২৫-২৬-এর জন্য তা ৬.২% অনুমান করা হয়েছে। এর প্রথম ত্রৈমাসিকে এই হার ছিল ৭.৮%। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত ৭ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হতে পারে।

এই অভাবনীয় সাফল্যের পেছনে আছে ভারতের বৃহৎ তরুণ জনসংখ্যা, ডিজিটাল বিপ্লব, উৎপাদন খাতে বিপুল বিনিয়োগ এবং বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের (FDI) নিরন্তর প্রবাহ। বিশ্বজুড়ে বহু সংস্থা এখন চীন থেকে সরে এসে ভারতকে তাদের উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার নতুন কেন্দ্র হিসেবে দেখছে। এটি চীনের জন্য বড় চিন্তার কারণ, কারণ ২০২৫ সালে তাদের জিডিপি বৃদ্ধির হার ৪%-এর কাছাকাছি এবং এফডিআই-ও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।

আমেরিকার দ্বিধা ‘শক্তিশালী ভারত, তবে বেশি শক্তিশালী নয়’

আমেরিকার কাছে ভারত চীনের বিরুদ্ধে একটি কৌশলগত অংশীদার, কিন্তু ভারতের লাগামহীন অগ্রগতি তাদের জন্য এক চ্যালেঞ্জও বটে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ভারতের পণ্যের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের মতো পদক্ষেপ আমেরিকার এই দ্বিধাকেই তুলে ধরে। এটি শুধু একটি বাণিজ্য যুদ্ধ নয়, বরং কৌশলগত জটিলতা। আমেরিকা চায় ভারত চীনকে ভারসাম্যযুক্ত রাখুক, কিন্তু রাশিয়ার থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার মতো ভারতের স্বাধীন সিদ্ধান্ত আমেরিকার প্রত্যাশাকে চ্যালেঞ্জ জানায়।

আমেরিকা শঙ্কিত যে ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ডিজিটাল গভর্ন্যান্স, জলবায়ু আলোচনা এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে তাদের বিশ্বব্যাপী আধিপত্যকে দুর্বল করে দিতে পারে। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, ভারতের উত্থানকে সঠিকভাবে সামলানো না গেলে তা আমেরিকার জন্য এক ‘কৌশলগত ব্যর্থতা’র কারণ হতে পারে।

চীন কেন ভারতকে নিয়ে উদ্বিগ্ন

চীনের কাছে ভারত শুধু একটি অর্থনৈতিক প্রতিযোগী নয়, বরং নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সীমান্ত বিরোধ, পাকিস্তানকে চীনের সমর্থন এবং মে ২০২৫-এর ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে চীনের ভূমিকা আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে। অর্থনৈতিক দিক থেকে, ভারত চীনের আঞ্চলিক আধিপত্যের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। অনেক রিপোর্ট অনুযায়ী, চীন ভারতকে তাদের ‘সবচেয়ে বড় ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দ্বী’ মনে করে। যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাম্প্রতিক চীন সফরে সম্পর্কে কিছুটা উষ্ণতা এসেছে, তবুও দুই দেশের মধ্যে কাঠামোগত বিরোধ রয়েই গেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *