১০০-র বেশি মামলায় বিপর্যস্ত আজম খানের মুক্তি, জেল থেকে বেরিয়েই কি অন্য দলে যাবেন? – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে একসময়ের দাপুটে নেতা আজম খান অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। গত ২৩ মাস ধরে তিনি সীতাপুর জেলে বন্দি ছিলেন। জমি দখল, জালিয়াতি থেকে শুরু করে গরু-ছাগল চুরির মতো বিভিন্ন অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে জামিন পেয়েছেন তিনি।
আজম খানের মুক্তির খবরে তাঁর সমর্থক ও সমাজবাদী পার্টির কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। তাঁর পরিবারও সীতাপুর পৌঁছে গেছে তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য। কিন্তু এরই মধ্যে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে যে তিনি হয়তো সমাজবাদী পার্টি ছেড়ে অন্য কোনো দলে যোগ দিতে পারেন।
কেন আজম খানের এই দুর্গতি?
২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আজম খানের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মোট ১০৪টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে ৯৩টি শুধু সীতাপুরে। এই মামলাগুলির বেশিরভাগই মোহাম্মদ আলি জওহর বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু মামলা:
- জমি দখল: তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি জোর করে কৃষকদের জমি দখল করে মোহাম্মদ আলি জওহর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ব্যবহার করেছেন।
- শত্রু সম্পত্তি: সরকারি ‘শত্রু সম্পত্তি’ বেআইনিভাবে দখল করার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে, যার জন্য তিনি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
- আশ্রয় প্রকল্পের জমি: গরিবদের জন্য তৈরি ‘আশরা আবাস’ প্রকল্পের জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
ভুয়া জন্ম সনদ: আজম খান, তাঁর স্ত্রী তানজিন ফতিমা এবং ছেলে আবদুল্লাহ আজমের বিরুদ্ধে দুটি ভুয়া জন্ম সনদ ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আবদুল্লাহর বিধানসভা সদস্যপদ বাতিল হয়।
উসকানিমূলক ভাষণ: আজম খান প্রায়শই তাঁর উসকানিমূলক মন্তব্যের জন্য শিরোনামে এসেছেন। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করার অভিযোগে তাঁর বিধানসভা সদস্যপদ বাতিল হয়।
আইনি জটিলতায় ভরা জীবন
আজম খানের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার সংখ্যা ২০০-র বেশি, যার মধ্যে তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। তাঁর বড় ছেলে আদিব আজমের বিরুদ্ধে ২০টিরও বেশি, ছোট ছেলে আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে ৪০টির মতো এবং স্ত্রী তানজিন ফতিমার বিরুদ্ধে প্রায় ৩০টি মামলা রয়েছে।
দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর তিনি অনেক মামলায় জামিন পেলেও নতুন অভিযোগ এবং আইনি জটিলতার কারণে তাঁর মুক্তি বারবার আটকে যায়। কিছু মামলায় তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হলেও, এখনও অনেক মামলা বিচারাধীন।
তাঁর এই দীর্ঘ কারাভোগ এবং আইনি লড়াই উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে একসময়ের প্রভাবশালী এই নেতার ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন তৈরি করেছে।