স্বামী না বিড়াল— কাকে বেছে নিলেন স্ত্রী? জানুন অবাক করা কাহিনি – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
বিবাহবিচ্ছেদ বা ডিভোর্সের কারণ হিসেবে সাধারণত পারিবারিক অশান্তি, হিংসা বা পণ সংক্রান্ত বিষয় সামনে আসে। কিন্তু মধ্যপ্রদেশের ভোপালে ঘটেছে এক অদ্ভুত ঘটনা। সেখানে আইটি ইঞ্জিনিয়ার এক দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ হতে চলেছে শুধুমাত্র তাদের পোষা প্রাণী কুকুর ও বিড়ালের ঝগড়ার কারণে। এই সমস্যার জেরে স্ত্রী পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, “আমি স্বামীকে ছাড়তে রাজি, কিন্তু আমার বিড়ালকে নয়।”
ঘটনার সূত্রপাত
ভোপালের এক অভিজাত এলাকায় থাকেন ৩২ বছর বয়সী এক যুবক ও তার ২৮ বছর বয়সী স্ত্রী। গত জানুয়ারি মাসে তাদের প্রেম করে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর তাদের সংসার বেশ ভালোই চলছিল, যতক্ষণ না স্ত্রী নিজের পোষা বিড়ালকে নিয়ে আসেন। স্বামী আগে থেকেই একটি কুকুর ও খরগোশ পুষতেন। স্ত্রী বিড়াল নিয়ে আসার পর থেকেই কুকুর ও বিড়ালের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। বিড়ালটিকে বারবার বিরক্ত করত স্বামীর কুকুর। এমনকি একবার বিড়ালটি আহতও হয়েছিল।
স্ত্রী বলেন, “আমার বিড়াল আমার প্রাণ, ও আমার পরিবারের একজন সদস্য। স্বামীর কুকুর ওকে সবসময় বিরক্ত করে। আমি অনেকবার এ নিয়ে কথা বললেও স্বামী কোনও ব্যবস্থা নেননি।”
অন্যদিকে স্বামীর দাবি, বিড়ালটিই বাড়িতে অশান্তি করছে। সে কুকুরকে জ্বালাতন করে, খরগোশের কাছে যায় ও অ্যাকোরিয়ামের মাছ শিকারের চেষ্টা করে। এই ছোট ছোট সমস্যাগুলোই ধীরে ধীরে তাদের সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে শুরু করে।
আদালতের দ্বারস্থ দম্পতি
অবশেষে উভয়ই বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তারা ভোপালের ফ্যামিলি কোর্টে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। আবেদনে উভয়েই ‘অস্বাভাবিক ব্যবহার’ এর অভিযোগ এনেছেন। কিন্তু মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে পোষা প্রাণীর বিবাদ। স্ত্রী আদালতে স্পষ্ট জানিয়েছেন, “আমি স্বামীকে ছাড়ব, কিন্তু আমার বিড়ালকে নয়।” অন্যদিকে স্বামীও তার পোষা প্রাণীকে ছাড়তে নারাজ।
কাউন্সিলিং ও ভবিষ্যৎ
ফ্যামিলি কোর্টের কাউন্সেলর শৈল অবস্থি এই কেসটির দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি জানান, এমন অদ্ভুত ঘটনা তিনি আগে দেখেননি। কোর্টের নিয়ম অনুযায়ী, তাদের তিন থেকে ছয় মাসের জন্য কাউন্সিলিং করানো হবে। এই সেশনগুলোতে বোঝানো হবে যে পোষা প্রাণী গুরুত্বপূর্ণ হলেও দাম্পত্য জীবনের চেয়ে বেশি নয়। তবে যদি কাউন্সিলিং ব্যর্থ হয়, তাহলে আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এই ঘটনা দেখিয়ে দেয় যে আধুনিক সমাজে পোষা প্রাণী কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তবে বিচ্ছেদের পর বিড়াল কার কাছে থাকবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।