জলমগ্ন কলকাতায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী, হুঁশিয়ারি দিলেন মেট্রো-সিইএসসি-কে – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

টানা বর্ষায় জল থইথই কলকাতা। জনজীবন বিপর্যস্ত। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি বিরোধীদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। নাম না করে তিনি বলেন, “যেসব রাজনৈতিক দল এই দুর্যোগ নিয়ে রাজনীতি করছেন, তাঁদের আমি ধিক্কার জানাই।” মুখ্যমন্ত্রীর মতে, মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে মিথ্যা কথা ছড়ানো হচ্ছে।

প্রকৃতির উপর কারও নিয়ন্ত্রণ নেই, এই কথা স্পষ্ট করে তিনি বলেন, “এমন ভাব করা হচ্ছে যেন প্রকৃতিও আমাদের হাতে। ভদ্রতার একটা সীমা আছে।” এ প্রসঙ্গে তিনি উত্তরাখণ্ড বা দিল্লির উদাহরণ টেনে বলেন, সেখানকার জলমগ্ন পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য রাজনীতি করেনি।

কলকাতার জলযন্ত্রণা প্রসঙ্গে তিনি কেন্দ্রকেও পরোক্ষভাবে আক্রমণ করেন। তাঁর প্রশ্ন, “ফারাক্কার ড্রেজিং কেন হয়নি, জবাব দিন?” তিনি আরও বলেন, পলি জমে বিহার এবং উত্তরপ্রদেশের জল গঙ্গায় মিশছে। এর ফলে গঙ্গার জলধারণ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, যা কলকাতার জল নিকাশির ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

রাজ্যের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁর সরকার সাড়ে পাঁচ লক্ষ পুকুর খনন করেছে। বাংলার জল বাংলাই সামাল দেবে, সেই ক্ষমতা আছে। কিন্তু বাইরে থেকে আসা জল আটকানো কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। টানা ৪-৫ মাস ধরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে এবং এবার পুজোর সময়ও এগিয়ে এসেছে, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে বলে তিনি মনে করেন।

শহর থেকে জল নামতে দেরি হওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মেট্রো কর্তৃপক্ষকেও দায়ী করেন। তিনি বলেন, মেট্রোর কাজের জন্য দিনের পর দিন বালি ও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী পড়ে থাকে, যা নিকাশি নালার পথ বন্ধ করে দিচ্ছে। এর দায় তাদেরও নিতে হবে।

বিদ্যুতের খোলা তারে প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে সিইএসসি-র উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “৮-৯ জন মারা গিয়েছেন বিদ্যুতের কারণে। সিইএসসি-কে বলেছি রাস্তায় পড়ে থাকা তারগুলো সরাতে হবে।” প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, জীবনের কোনো বিকল্প হয় না, তবু সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তার মতে, প্রত্যেক পরিবারকেই সিইএসসি-র পক্ষ থেকে অন্তত পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *