ভারতীয় সফটওয়্যারে আস্থা! মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব কেন ছেড়ে দিলেন গুগল ও মাইক্রোসফট? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

দেশের প্রযুক্তি এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সম্প্রতি এক বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি তাঁর সমস্ত সরকারি কাজে গুগল ডকস ও মাইক্রোসফট অফিস ব্যবহার করা বন্ধ করে দিয়েছেন। এর বদলে তিনি এখন থেকে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি একটি প্ল্যাটফর্ম, জোহো (Zoho) ব্যবহার করবেন। মন্ত্রীর এই পদক্ষেপ ভারতীয় প্রযুক্তির ওপর তাঁর গভীর আস্থা এবং ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মকে উৎসাহ দেওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিচ্ছে।

কী এই জোহো, যা মন্ত্রীর পছন্দ?

জোহো হলো ভারতের চেন্নাই-ভিত্তিক একটি প্রযুক্তি সংস্থা, যা শ্রীধর ভেম্বু এবং টনি থমাস ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। এটি মূলত ক্লাউড-ভিত্তিক সফটওয়্যার এবং ব্যবসায়িক সরঞ্জাম সরবরাহ করে। গুগল এবং মাইক্রোসফটের মতোই, এই প্ল্যাটফর্মে রয়েছে ডকুমেন্ট, স্প্রেডশিট, প্রেজেন্টেশনসহ ৫০টিরও বেশি টুল। এতে ইমেইল, অ্যাকাউন্টিং, এইচআর, প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট এবং গ্রাহক সম্পর্ক ব্যবস্থাপনার (CRM) মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলোও পাওয়া যায়। বর্তমানে বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে ১০ কোটির বেশি ব্যবহারকারী জোহোর পরিষেবা নিচ্ছেন।

জোহো কি মাইক্রোসফটের দেশি বিকল্প?

অনেকেই জোহোকে মাইক্রোসফট অফিসের একটি দেশীয় সংস্করণ বলছেন। এই প্ল্যাটফর্মটি ছোট-বড় সব ধরনের ব্যবসার জন্য খুবই উপযোগী। জোহো সিআরএম (CRM), জোহো বুকস (Books) এবং জোহো প্রজেক্টসের (Projects) মতো টুলগুলো ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াকে অনেক সহজ করে তোলে। একই সঙ্গে এটি ব্যবহার করাও কম ব্যয়বহুল।

মন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নিয়ে যা বলছে সোশ্যাল মিডিয়া

অশ্বিনী বৈষ্ণব তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা টুইটারে (বর্তমানে এক্স) ঘোষণা করার পর থেকেই তা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে। এই পদক্ষেপকে অনেকে দেশীয় ডিজিটাল অ্যাপগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি বড় অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন। জোহোর প্রতিষ্ঠাতা শ্রীধর ভেম্বুও মন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত জোহোর পেছনে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে চলা ইঞ্জিনিয়ারদের মনোবল অনেক বাড়িয়ে দেবে।

সাধারণ ব্যবহারকারীরাও মন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে বেশ উচ্ছ্বসিত। একজন এক্স ব্যবহারকারী লিখেছেন যে তিনি জোহোর সাবস্ক্রিপশন নিয়েছেন শুধু ভারতীয় পণ্য বলে নয়, এর অসাধারণ মানের জন্য। আরেকজন মন্তব্য করেছেন, জোহো কেবল ব্যবসা নয়, সাধারণ মানুষের কাছেও একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠতে পারে। মন্ত্রীর এই পদক্ষেপ দেশের ডিজিটাল ক্ষেত্রে বিদেশি সফটওয়্যারের ওপর নির্ভরতা কমাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *