চীনের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে ভারতের সমুদ্রে কী ঘটতে চলেছে? জেনে নিন সেই উত্তরের রহস্য – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতায় নতুন পালক যোগ হতে চলেছে। খুব শীঘ্রই ভারতীয় নৌবাহিনীতে যুক্ত হচ্ছে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি অত্যাধুনিক সাবমেরিন বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ ‘অ্যান্ড্রথ’। কলকাতাভিত্তিক গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স (GRSE) এটি নির্মাণ করেছে। এটি কেবল একটি যুদ্ধজাহাজ নয়, বরং ভারতের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ নীতির এক শক্তিশালী প্রতীক।
অ্যান্ড্রথ নামটি এসেছে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের একটি দ্বীপ থেকে, যা সমুদ্রসীমা সংরক্ষণে ভারতের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার ইঙ্গিত দেয়। প্রায় ৯০০ টন ওজনের এই যুদ্ধজাহাজটি ডিজেল ইঞ্জিন ও ওয়াটার-জেট প্রযুক্তিতে চলে, যা একে গতি এবং নমনীয়তার দিক থেকে অপ্রতিরোধ্য করে তোলে।
সবচেয়ে বড় রহস্য লুকিয়ে আছে এর কার্যকারিতায়। এর ড্রাফ্ট মাত্র ২.৭ মিটার হওয়ায় এটি বিশেষ করে অগভীর জলের উপকূলীয় এলাকায় সহজেই সাবমেরিন এবং অন্যান্য জলযানকে শনাক্ত ও মোকাবিলা করতে সক্ষম। অর্থাৎ, প্রতিপক্ষের যে কোনও ধরনের গোপন গতিবিধি রুখে দিতে এর জুড়ি মেলা ভার।
এই যুদ্ধজাহাজে রয়েছে লাইটওয়েট টরপেডো, দেশীয় ASW রকেট, উন্নত শ্যালো ওয়াটার সোনার এবং ৩০ মিমি নেভাল সারফেস গান। এর অত্যাধুনিক সেন্সর সিস্টেম এবং যুদ্ধ ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি শত্রুপক্ষের যে কোনও কার্যকলাপকে দ্রুত মোকাবিলা করতে সক্ষম।
অ্যান্ড্রথের মতো জাহাজগুলোর ৮০ শতাংশেরও বেশি উপাদান দেশীয় উৎস থেকে তৈরি। এর ফলে এটি কেবল প্রতিরক্ষা সক্ষমতাই বাড়ায় না, বরং দেশের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি জলরেখার নজরদারি, গোপন অনুসন্ধান, আক্রমণ, মাইন স্থাপন এবং কম তীব্রতার সামুদ্রিক অভিযানে বিশেষভাবে কার্যকর হবে।
ভারতের সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই ধরনের যুদ্ধজাহাজের সংযোজন অত্যন্ত জরুরি ছিল। যখন প্রতিবেশী দেশগুলো আধুনিক সাবমেরিন ও নজরদারি প্রযুক্তি নিয়ে নিজেদের ক্ষমতা বাড়াচ্ছে, তখন ‘অ্যান্ড্রথ’-এর আগমন দেশের উপকূলীয় নিরাপত্তাকে এক নতুন মাত্রায় পৌঁছে দেবে।