মমতাকে পদত্যাগের দাবি, গ্রেফতার হোক ফিরহাদ হাকিম! কলকাতায় ১০ জনের মৃত্যু নিয়ে বিস্ফোরক শুভেন্দু – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
আবহাওয়া দফতরের আগাম সতর্কতা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, যার ফলস্বরূপ কলকাতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনাকে ‘পরোক্ষভাবে রাজ্য সরকারের দ্বারা খুন’ বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ ও কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমসহ তিন হেভিওয়েটকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার কোলাঘাটে নথিপত্র দেখিয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি।
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, আবহাওয়া দফতর ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করলেও প্রশাসন সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেনি। তিনি বলেন, ‘নবান্ন আর কলকাতা পুলিশ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করতে পারলেও প্রতিকূল আবহাওয়া নিয়ে মানুষকে সতর্ক করতে পারলো না।’ গভীর রাতে হাফ প্যান্ট পরে জলে নেমে ফিরহাদ হাকিমের ছবি তোলারও কড়া সমালোচনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘কলকাতার স্ট্রিট লাইট আর ট্রাফিক লাইটের পোস্টে হাত দিয়ে তিনজন মারা গিয়েছেন। ফিরহাদ হাকিমকে গ্রেফতার করতে হবে। নগরপাল মনোজ বর্মা, ফিরহাদ হাকিম আর সিইএসসির চেয়ারম্যান সঞ্জীব গোয়েঙ্কাকে জেলে দেখতে চায় বাংলা।’ শুভেন্দু জানান, মৃতদের পরিবারকে দিয়ে এফআইআর এবং জনস্বার্থ মামলা করানো হবে।
মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে তিনি আরও বলেন, ‘পিতৃপক্ষে হিজাব পরে পুজো উদ্বোধন মা দুর্গা ভালোভাবে নেননি। সনাতন হিন্দু ধর্মকে আঘাতের এমন পাপ মেনে নেননি। তার ফল যা হওয়ার হয়েছে। যে তিনটি পুজো শনিবার মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করেন তার তিনটিতেই আজ জল থৈ থৈ অবস্থা।’ মৃতদের পরিবারের জন্য আর্থিক সাহায্যের দাবি জানিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘রাজ্য সরকার, কলকাতা কর্পোরেশন ও সিইএসসি—প্রত্যেকের তরফে ১ কোটি টাকা করে মোট ৩ কোটি টাকা দিতে হবে।’
মুখ্যমন্ত্রীর পুজো উদ্বোধনের তীব্র নিন্দা করে শুভেন্দু বলেন, ‘এতজন নাগরিকের মৃত্যুর পরেও মুখ্যমন্ত্রীর পুজো উদ্বোধন করা লজ্জার। মানুষ হিসেবে ন্যূনতম হুঁশ থাকলে শোক পালন করা উচিত ছিল।’ তিনি জানান, এই ঘটনার প্রতিবাদে তাদের পুজো উদ্বোধনসহ অন্যান্য কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার জন্য ড্রেজিং না হওয়া এবং ডিভিসির জল ছাড়াকে দায়ী করেছেন। এর পাল্টা দিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘ডিভিসির জল তো কলকাতায় যায় না। আর ড্রেজিং যদি করতেই হয়, তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পিছনে কালীঘাটে খাল দখল করে রয়েছেন, সেখান থেকেই শুরু করা উচিত।’ একইসঙ্গে তিনি কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় ৫ হাজার পুকুর ভরাট করে ফেলার অভিযোগও তোলেন।
স্কুল-কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে শুভেন্দু বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির বাচ্চারা তো বেসরকারি স্কুলে পড়েন। তাঁরা প্রচুর টাকা দেন। কিন্তু রাজ্যের ৮২০০ সরকারি স্কুল বন্ধ হয়েছে। শিল্প কারখানা তাড়ানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ভাবেন ছুটি দিলে সকলে খুশি হয়, কিন্তু তা নয়।’