৩১ বছর পর কেন মুক্তি পেল না খালিদ? নতুন মোড় নিল ১৯৯৩ সালের ভয়ঙ্কর মামলা – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

বহু আলোচিত ১৯৯৩ সালের বৌবাজার বিস্ফোরণ মামলায় নতুন মোড়। ৩১ বছর ধরে কারাবন্দী থাকা মূল অভিযুক্তদের একজন, মহম্মদ খালিদকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ, যার ফলে আপাতত তাঁর মুক্তি আটকে গেল।

আসলে কী ঘটেছিল?

গত বছর জুন মাসে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ খালিদকে ১৫ দিনের মধ্যে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কারণ, জেলের ভিতরে তাঁর আচরণ ইতিবাচক ছিল এবং তিনি ইতিমধ্যেই ৩১ বছর সাজা খেটেছেন। সাধারণত, ১৪ বছর সাজা কাটানোর পর বন্দির মুক্তির আবেদন বিবেচনা করা হয়। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই সিঙ্গল বেঞ্চ তাঁর মুক্তির নির্দেশ দেয়।

তবে এই নির্দেশের বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানায় কলকাতা পুলিশ। পুলিশের দাবি ছিল, এমন এক দাগী আসামিকে মুক্তি দিলে সমাজে বিপজ্জনক প্রভাব পড়তে পারে। সেই যুক্তিতেই রাজ্য সরকার সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে। ডিভিশন বেঞ্চ প্রথমে সেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয় এবং অবশেষে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের বেঞ্চ সেই নির্দেশ খারিজ করে দেয়।

পুলিশের বক্তব্য ছিল, খালিদ মুক্তি পেলে এলাকায় ফের অশান্তি তৈরি হতে পারে এবং তাঁর নাম এখনও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে। ডিভিশন বেঞ্চও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশটি আইনত বৈধ নয়। তবে, অভিযুক্ত যদি নতুন করে মুক্তির আবেদন করেন, তবে রাজ্যকে তা বিবেচনা করতে হবে।

রশিদ খানের প্রসঙ্গ

এই মামলার আরেক মূল অভিযুক্ত সাট্টা ডন রশিদ খানও ৩১ বছর ধরে জেলে আছেন। রশিদ খানের আইনজীবী ৩০ বারের বেশি প্যারোলের আবেদন জানালেও একবারও তাঁকে ছাড়া হয়নি। পুলিশের যুক্তি, রশিদকে মুক্তি দিলে সমাজে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। ১৯৯৩ সালের সেই বিস্ফোরণের আতঙ্ক আজও মানুষের মনে তাজা।

উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালের বৌবাজার বিস্ফোরণে ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। শহরের ইতিহাসে এটি এক ভয়াবহ অধ্যায়। সেই মামলায় আজও খালিদ ও রশিদ কারাবন্দী। কলকাতা হাইকোর্টে তাদের মুক্তির আবেদন উঠলেও ডিভিশন বেঞ্চ তা খারিজ করে সমাজে ফের অশান্তি তৈরির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *