ইউরোপে কি তাহলে ভাঙন? বাইডেন নন, ট্রাম্পকে জেতাতে মরিয়া এই দেশ, ন্যাটোতেও চলছে টানাপোড়েন – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী, তখন থেকেই তাঁর ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির প্রভাব দেখা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে। ন্যাটো সদস্য দেশগুলোকেও তিনি রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর সেই বার্তায় এবার সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে ন্যাটোরই এক সদস্য রাষ্ট্র। শুধু তা-ই নয়, তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, ট্রাম্পের কথা তারা মানবে না এবং রাশিয়ার সঙ্গে তেল ব্যবসা বন্ধ করবে না।
ঠিক কী ঘটেছে?
সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ন্যাটো দেশগুলোকে রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ন্যাটো জোটের সদস্যদের রাশিয়ার সঙ্গে তেল কেনাবেচা সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। তবে ট্রাম্পের এই আহ্বানে সাড়া না দিয়ে ভিন্ন পথে হেঁটেছে হাঙ্গেরি।
জাতিসংঘের ৮০তম বার্ষিক অধিবেশনের ফাঁকে এক সাক্ষাৎকারে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজ্জার্তো স্পষ্ট জানিয়েছেন, “আমরা রাশিয়ার তেল বা গ্যাস ছাড়া আমাদের দেশের জন্য নিরাপদ জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারব না।”
সিজ্জার্তো আরও বলেন, “অন্য কোথাও থেকে তেল-গ্যাস কেনার স্বপ্ন দেখা ভালো, কিন্তু আমাদের দেশে অবকাঠামো যা আছে, তাতে রাশিয়ার সরবরাহ ছাড়া চলা আসাম্ভব।” এই মন্তব্য করে তিনি আসলে ট্রাম্পের বার্তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন।
ট্রাম্পের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে ন্যাটো
ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার কথা বলছেন। কিন্তু তাঁর দেওয়া সময়সীমা বারবার পেরিয়ে গেলেও তিনি কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। এতে কিছু ন্যাটো সদস্য দেশ প্রশ্ন তুলেছে, ট্রাম্প কি আসলেই রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে চান, নাকি শুধু ইউরোপের ওপর দায় চাপাতে চাইছেন?
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান, যিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত, তিনিও এই বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছেন এবং ইউক্রেনের কঠোর সমালোচনা করেছেন।
অন্যদিকে, ডাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, রাশিয়ার তেল কেনা এখন কেবল হাঙ্গেরি এবং স্লোভাকিয়ার ওপর নির্ভর করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, এই দুটি দেশ দ্রুত এই ‘রক্তক্ষয়ী’ সংঘাত বন্ধে এগিয়ে আসবে। ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাবও মনে করেন, ইউরোপের উচিত হাঙ্গেরি এবং স্লোভাকিয়ার ওপর চাপ বাড়ানো।
তবে ইউরোপের চাপের মুখেও সিজ্জার্তো তাঁর অবস্থানে অনড়। তিনি বলেন, পশ্চিমি কর্মকর্তাদের ‘কট্টরপন্থী’ বলা যেতে পারে। পাশাপাশি তিনি এও জানান, আমেরিকার সঙ্গে হাঙ্গেরির সম্পর্ক অনেক ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, হাঙ্গেরি একমাত্র ইউরোপীয় সরকার, যারা ট্রাম্পের জয়ের জন্য প্রার্থনা করছে।