পাকিস্তানকে নিয়ে চীন ও আমেরিকার নতুন চাল? ‘ডাবল গেম’ খেলার ফল ভুগবে ইসলামাবাদ! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

আতঙ্ক আর সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর বলে পরিচিত পাকিস্তানের ‘ডাবল গেম’ খেলার কৌশল এবার তাদের জন্যই গলার ফাঁস হয়ে উঠতে পারে। এমন এক জটিল পরিস্থিতিতে ইসলামাবাদ জড়িয়ে পড়েছে, যেখান থেকে বেরোনো তাদের পক্ষে কার্যত আসাম্ভব। আর এই পরিস্থিতির সরাসরি ফায়দা পেতে পারে ভারত।

চীন ও আমেরিকার মতো দুই পরাশক্তির মধ্যে আটকে পড়লে পাকিস্তান অভ্যন্তরীণভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে। তখন তাদের পুরো মনোযোগ এই দুই দেশের সম্পর্ক সামাল দিতেই চলে যাবে। ফলে ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার সুযোগ কমবে, যা এতদিন ধরে চলে আসছে।

আসলে, পাকিস্তান এই ‘ডাবল গেম’ খেলছে চীন ও আমেরিকার সঙ্গে। গত এক দশক ধরে পাকিস্তান চীনের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। মোটা সুদে বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়েছে তারা এবং বিনিময়ে নিজেদের খনিজ সম্পদ লুট করার সুযোগ করে দিয়েছে চীনকে। কিন্তু এখন পাকিস্তান চীন ও আমেরিকা—এই দুই নৌকায় পা রাখতে চাইছে।

একদিকে পাকিস্তান চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাইছে, অন্যদিকে নতুন পাক সরকার আমেরিকা তোষণ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। সম্প্রতি পাক সেনাপ্রধান অসীম মুনিরকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যাহ্নভোজের জন্য ডেকেছিলেন। তখন মুনির ট্রাম্পকে বেলুচিস্তানে ক্রিপ্টো, তেল এবং খনিজের নাগাল দেওয়ার প্রস্তাবও দেন। শুধু তাই নয়, ‘অপারেশন সিন্দুর’-এ ভারতের হাতে পর্যুদস্ত হওয়ার পর শাহবাজ শরিফ ও অসীম মুনির যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব ট্রাম্পকেই দেন। এরপর এক ধাপ এগিয়ে পাকিস্তান ট্রাম্পের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের দাবিও জানায়।

আমেরিকার আফগানিস্তানে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত চীনের জন্য একটি বড় ধাক্কা। কারণ আমেরিকার আফগানিস্তানে প্রত্যাবর্তন পাকিস্তানের পথ দিয়েই হবে। আমেরিকার এই ফিরে আসা চীনের জন্য সহজ হবে না। বগ্রাম বিমানবন্দর থেকে আমেরিকা সরে যাওয়ার পর আফগানিস্তানের খনিজ সম্পদ চীনের হাতে চলে এসেছিল। চীন তো এমনকি CPEC করিডরকে আফগানিস্তান পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ারও পরিকল্পনা করছিল। আমেরিকার আফগানিস্তান ছাড়ার পর সেখানকার যে খনিজ সম্পদ চীনের হাতে আসার কথা ছিল, এখন তা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

চীন পাকিস্তানকে ‘আয়রন ব্রাদার’ বলে মনে করে। তারা পাকিস্তানকে ৬২ বিলিয়ন ডলারের চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (CPEC)-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখে। এই মুহূর্তে পাকিস্তান উভয় পরাশক্তি (আমেরিকা ও চীন)-র সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে চাইছে। বেইজিং এই সম্পর্ককে কতটা মেনে নেবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। প্রশ্ন হলো, চীন কি এত সহজে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকে আমেরিকার হাতে চলে যেতে দেবে? এই পরিস্থিতিতে আমেরিকা ও চীনের স্বার্থ একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াবে এবং পাকিস্তান সম্ভবত একটি নতুন রণক্ষেত্রে পরিণত হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *