ইন্দোরের পোশাক বাজারে হঠাৎ কেন বন্ধ হাজার দোকান? ‘লাভ জেহাদ’ রুখতে বিধায়কপুত্রের নির্দেশে বিপাকে ব্যবসায়ীরা – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে হঠাৎ আতঙ্কের মুখে পড়েছেন মুসলিম ব্যবসায়ীরা। শহরের সর্ববৃহৎ পোশাক বাজার শীতলামাতা মার্কেটে প্রায় হাজারখানেক মুসলিম মালিকের দোকান এখন বন্ধ হয়ে আছে। বিজেপি বিধায়ক মালিনী গৌরের ছেলে একলব্য সিং গৌর হুমকি দিয়েছেন, দুই মাসের মধ্যে সব মুসলিম কর্মচারী ও ব্যবসায়ীদের দোকান ছেড়ে চলে যেতে হবে। আগামী বৃহস্পতিবার এই চরমসীমা শেষ হতে চলেছে। তার আগেই আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকে।
স্থানীয়রা একলব্য সিং গৌরকে ‘বিধায়কপুত্র’ নামেই চেনেন। শীতলামাতা বাজার ব্যাপারী সংগঠনের একটি সভায় তিনি এই ফতোয়া জারি করেন। তার দাবি, এই এলাকায় ‘লাভ জেহাদ’-এর ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে, তাই মুসলিমদের সরাতে হবে।
সংগঠনের এক নেত্রী জানান, মুসলিম সেলসম্যানদের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ এসেছে যে তারা রাস্তা থেকে মহিলাদের উত্ত্যক্ত করে। তাই একলব্য ভাইয়া কড়া পদক্ষেপ নিতে চেয়েছেন। এর ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, কোনো মুসলিমকে দোকান ভাড়া দেওয়া হবে না, কোনো মুসলিম কর্মী রাখা হবে না, এবং যারা দোকান নিয়েছেন, তাদেরও চলে যেতে হবে। তিনি আরও জানান, এই অভিযান সফল হলে সারা শহরে একই নীতি প্রয়োগ করা হবে।
একলব্যের এক অনুগামী জানিয়েছেন, এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাজার কা শুদ্ধিকরণ’। তারা প্রতিটি মুসলিম কর্মীর আধার কার্ডের তথ্য সংগ্রহ করছেন এবং খতিয়ে দেখছেন, কেউ ‘লাভ জেহাদ’-এর সঙ্গে জড়িত কি না।
হিন্দ রক্ষক সংগঠন নামে একটি দলের আহ্বায়ক একলব্যর সঙ্গে বজরঙ্গ দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো সংগঠনও রয়েছে। তাদের লক্ষ্য হলো মুসলিম কর্মীদের সরিয়ে সেই জায়গায় বেকার হিন্দু যুবকদের কাজের ব্যবস্থা করা। তবে কোনো দোকানদার এই নির্দেশ না মানলে কী হবে, সে বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলা হয়নি।
দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে এই বাজারে কাজ করা মহম্মদ শাহিদ বলেন, “আমরা কোনো গ্রাহকের নম্বর নিই না, নম্বর নেন দোকানের মালিকরাই। আমি যে দোকানে কাজ করি, সেখানে আমরা তিন মুসলিম কর্মচারী আছি। মালিক হিন্দু। উনি আমাদের তাড়াতে চান না, কিন্তু তার হাত-পা বাঁধা।”
অন্যদিকে, পুলিশ কমিশনার অমিত সিং জানিয়েছেন, এ বিষয়ে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’ বিধায়কপুত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি, যদিও এমন নির্দেশ তিনি দিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।