আটকে আছে প্রাণ! জলমগ্ন কলেজ স্ট্রিটে কোটি কোটি টাকার বইয়ের ‘সমাধি’, কীভাবে ফিরবে স্বাভাবিকতা? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
কলকাতা: সোমবার রাতের টানা বৃষ্টিতে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে কলকাতার কলেজ স্ট্রিট। বইপাড়া থেকে শুরু করে সংলগ্ন বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিট এবং সূর্য সেন স্ট্রিট—সর্বত্রই যেন বর্ণমালার সমাধিক্ষেত্র। জলে ভিজে দলা পাকিয়ে যাওয়া কোটি কোটি টাকার বই এখন রাস্তার পাশে স্তূপ হয়ে পড়ে আছে। ছোট-বড় সব ধরনের বই ব্যবসায়ীই ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তবে এই চরম বিপর্যয়ের মধ্যেও ঘুরে দাঁড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
ক্ষতিপূরণের প্রশ্নই এখন ঘুরছে সবার মুখে। বিশ্বজিৎ বুক স্টলের এক দোকানি জানালেন, শুধুমাত্র বিভিন্ন প্রশ্নপত্র সংকলনই ছিল ৫০ হাজার টাকার। সব নষ্ট হয়ে গেছে। অন্যদিকে, কলেজ স্কোয়ার হকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দে বলেছেন, ক্ষতির সঠিক হিসেব এখনও করা না হলেও, এর অঙ্ক ১০-১২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
শুধুমাত্র বই নয়, স্টেশনারি সামগ্রী, প্রিন্টিংয়ের সরঞ্জাম, লটারির টিকিট এবং পোশাকের দোকানও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আনন্দ কার্ডসের কর্ণধার জানাচ্ছেন, নতুন কার্ডের পাশাপাশি ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত কার্ডও নষ্ট হয়ে গেছে। এক লটারি টিকিট বিক্রেতার সবটাই জলে ভেসে গেছে। অনেক দোকানিই ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কমানোর জন্য ভেজা বই বা অন্যান্য জিনিসপত্র ৫০-৭০ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি করছেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে ৩০ টাকায় গোছা গোছা কলম বিক্রি করতে দেখা গেছে এক তরুণকে। তিনি বললেন, “যা আসে তাই লাভ।” সব মিলিয়ে, এই এলাকার ক্ষতির অঙ্ক প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
তবে সবকিছু হারিয়েও ব্যবসায়ীরা আশাবাদী। তারা হার মানতে নারাজ। সকাল থেকে শুরু হয়েছে ভেজা বই রোদে ও হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে শুকনোর কাজ। এর মধ্যেই হালকা স্বরে শোনা যাচ্ছে বই বিক্রেতাদের পরিচিত হাঁকডাক। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই ধাক্কা সামলাতে সময় লাগবে, কিন্তু ফিনিক্স পাখির মতো ছাই থেকে আবার নতুন করে জন্ম নেবে কলেজ স্ট্রিট।