১০ মিনিটে ছয় খুন রহস্য ফাঁস! শ্যালিকার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে কুড়ুলের কোপে শেষ গোটা পরিবার – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
উত্তর প্রদেশের লখনউতে ২০০৯ সালের ২৫ এপ্রিলের সকাল। মোহনলালগঞ্জ তহসিলের গৌরা গ্রামে নিজ বাড়িতে রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সন্তোষী। ঠিক সেই সময়ে তাঁর তিন শিশুসন্তান রামরূপ, সুমিরন ও রবি উঠোনের খাটে ঘুমাচ্ছিল। হঠাৎ স্বামী সরবনের সঙ্গে ঝগড়া শুরু হয় সন্তোষীর। ঝগড়ার একপর্যায়ে রাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান সরবন।
এর ঠিক ১০ মিনিট পর এক পুরুষ ও এক নারী ঘরে প্রবেশ করে। নারীর হাতে ছিল কুড়ুল। তাদের দেখে নির্ভয়ে এগিয়ে আসেন সন্তোষী। তিনি বলেন, “আয়, সাহস থাকলে আমাকে মেরে দেখা।” সন্তোষীর কথায় জেগে ওঠে শিশুরা। ৬ বছরের রামরূপ হত্যাকারীর পা জড়িয়ে ধরে কাকুতি-মিনতি করতে থাকে। রামরূপকে লাথি মেরে সরিয়ে দেয় সেই পুরুষ। এরপর কুড়ুল দিয়ে সন্তোষীর ঘাড়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। একসময় তার চোখ বেরিয়ে আসে এবং সে লুটিয়ে পড়ে। এরপর একে একে তিন সন্তানকে কুপিয়ে হত্যা করে সে।
সন্তোষীর বাড়ির সামনেই থাকত মাধুরী ও তার পরিবার। চিৎকার শুনে সন্তোষীর বাড়িতে গিয়ে উঠোনে রক্ত আর কুড়ুল হাতে সেই পুরুষকে দেখে ভয়ে পালানোর চেষ্টা করেন মাধুরী। কিন্তু হত্যাকারী তার পেছনে ধাওয়া করে। মাধুরীর ঘাড়ে কুড়ুল দিয়ে আঘাত করলে তার মাথা দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। মায়ের চিৎকারে ছুটে আসে মাধুরীর মেয়ে সঙ্গীতা। হত্যাকারী তাকেও কোপাতে এলে সে প্রাণভয়ে দৌড়ে মোহনলালগঞ্জ থানায় গিয়ে পৌঁছায়।
থানায় গিয়ে সঙ্গীতা পুলিশকে জানায়, তার মা এবং সন্তোষীর পরিবারের সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সে আরও জানায়, এই ঘটনার পেছনে সুমন নামে এক নারীর হাত আছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ দেখতে পায়। আহত অবস্থায় বেঁচে থাকা এক শিশুকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। গ্রামবাসীরা জানায়, হত্যাকারীর নাম সরবন। সে তার ভাবি সুমনের সঙ্গে একটি অবৈধ সম্পর্কে জড়িত ছিল। এর প্রতিবাদ করায় সরবনের স্ত্রী সন্তোষীকে প্রায়ই মারধর করত। পুলিশ সরবন, সুমন ও অন্যান্য সন্দেহভাজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
তদন্তে জানা যায়, সরবনই তার ভাবি সুমনের সঙ্গে প্রেমের কারণে তার নিজের স্ত্রী এবং সন্তানদের হত্যা করেছে। আরও জানা যায়, শুধু তারাই নয়, ঘটনার সাক্ষী হওয়ায় পাশের বাড়ির মাধুরীকেও নির্মমভাবে খুন করে সরবন। প্রায় ৯ বছর পর এই মামলার রায় ঘোষণা করে আদালত। সরবনের ফাঁসির আদেশ হয় এবং তার ভাবি সুমনকে চার বছরের কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।