বিপদের মুখেও কেন নিশ্চিন্ত থাকেন ট্রেনের চালক? এক মিনিটেই রহস্য ফাঁস করবে এই যন্ত্র – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
রেল দুর্ঘটনা এড়াতে ভারতীয় রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা শক্তিশালী, তা হয়তো অনেকেরই অজানা। সাধারণত আমরা সড়ক দুর্ঘটনার নানা কারণ শুনে থাকি, যার মধ্যে অন্যতম হলো চালকের হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়া বা অসাবধানতা। কিন্তু হাজার হাজার যাত্রীকে নিয়ে ছুটে চলা ট্রেনের চালক যদি কখনো অসতর্ক হন, তাহলে কী হবে? এই প্রশ্নই বারবার আমাদের মনে আসে।
তবে জেনে রাখুন, ভারতীয় রেল এক্ষেত্রে অত্যন্ত সুরক্ষিত। ট্রেনে চালকের সঙ্গে সবসময় একজন সহকারী চালক থাকেন। কোনো কারণে চালক ঘুমিয়ে পড়লে বা শারীরিক অসুস্থতার শিকার হলে সহকারী চালক দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দেন। প্রয়োজনে তিনি পরের স্টেশনে খবর দিয়ে ট্রেন থামিয়ে দেন এবং সেখানে নতুন চালক আসেন।
কিন্তু যদি দুজন চালকই কোনো কারণে অসতর্ক হয়ে পড়েন? সেই বিরলতম পরিস্থিতির জন্যও ব্যবস্থা আছে। ভারতীয় রেলের ইঞ্জিনগুলোতে রয়েছে একটি বিশেষ যন্ত্র, যার নাম ভিজিল্যান্স কন্ট্রোল ডিভাইস (Vigilance Control Device) বা ভি সি ডি। এই যন্ত্রটি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে চালকের গতিবিধি লক্ষ্য রাখে।
যদি কোনো কারণে চালক এক মিনিটের জন্য কোনো কাজ না করেন, অর্থাৎ ট্রেন চালানো, হর্ন বাজানো বা গতি পরিবর্তন না করেন, তখন ভি সি ডি সক্রিয় হয়ে ওঠে। ১৭ সেকেন্ডের মধ্যে এটি একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল সংকেত পাঠায়। চালককে একটি বোতাম টিপে এই সংকেতটি স্বীকার করতে হয়। যদি চালক তা না করেন, তাহলে পরের ১৭ সেকেন্ডের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেনের ব্রেক কষা শুরু হয়ে যায়।
এই ব্যবস্থায় ট্রেনটি সর্বোচ্চ এক কিলোমিটার এগিয়ে থেমে যায়। এরপর ট্রেনের অন্য কর্মীরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। এভাবেই একটি বড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিশ্চিত করে যে, ট্রেনের চালক সামান্যতম অসাবধান হলেও যাত্রীদের জীবন সুরক্ষিত থাকবে।