ছোট ঋণ পরিশোধের পর বড় কেলেঙ্কারি! কুয়েতে কেরলের ১৩ জন নার্সের ধোঁকা – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
কুয়েতে ভয়াবহ আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠল কেরালার ১৩ জন ভারতীয় নার্সের বিরুদ্ধে। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ঋণের জালে কুয়েতের আল আহলি ব্যাঙ্ককে বিপাকে ফেলে রাতারাতি দেশ ছেড়েছেন ওই নার্সরা। সবমিলিয়ে বকেয়া ঋণের পরিমাণ শুনলে চোখ কপালে উঠবে— ১০ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা!
২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে কুয়েতের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনে কাজ করতেন এই নার্সরা। ব্যাঙ্কের অভিযোগ, প্রথমে ছোট ছোট ঋণ নিয়ে সঠিক সময়ে শোধ করে বিশ্বাস অর্জন করেন তারা। এরপর বড় অঙ্কের ঋণ নেন। সেই ঋণের কয়েকটি কিস্তি শোধ করার পর আচমকাই চাকরি ছেড়ে কুয়েত থেকে ভারতে ফিরে যান।
কিন্তু তারপর কী হলো?
অভিযোগ, ওই নার্সরা পরে ইউরোপ ও পশ্চিমা দেশগুলিতে আরও ভালো বেতনের চাকরি খুঁজে নেন এবং সেখানেই এখন কর্মরত আছেন। কিন্তু কুয়েতের ব্যাঙ্কের নেওয়া ঋণ আর শোধ করেননি। প্রত্যেকের কাছে ৬১ লক্ষ থেকে ৯১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বকেয়া রয়েছে। বর্তমানে তাঁরা বিদেশে ভালো মাইনে পেলেও ঋণ পরিশোধে উদ্যোগী হননি। এই ১৩ জনের কেউই এখন কেরলে নেই।
কোথায় মামলা হলো?
আল আহলি ব্যাঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতে কেরলের পুলিশ কোট্টায়ম ও এর্নাকুলাম জেলায় ওই ১৩ জন নার্সের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। কোট্টায়মে কুরাভিলানগড়, আয়রকুন্নম, ভেল্লুর, কডুথুরুথি, বৈকোম এবং থালায়োলপরম্বু থানায় মোট আটটি মামলা রুজু হয়েছে। অন্যদিকে, এর্নাকুলামে পুথেনক্রুজ, পোতানিকাড, ভারাপ্পুঝা এবং আঙ্গা মালি থানায় পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আগেও এমন ঘটনা
গত বছর ডিসেম্বরেও অন্য একটি ব্যাঙ্ক একই ধরনের প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে কেরল পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিল। সেই সময় ১০টি মামলা রুজু হয়েছিল। সেই ১০ জনের মধ্যে একজন ঋণ পরিশোধ করে দেন। বাকিরা কেরল হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে দেয়।
এরপর কী হতে পারে?
সূত্রের খবর, এই ১৩ নার্সের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি হতে পারে। ফলে তাঁরা কেরলে ফিরলে গ্রেফতার হতে পারেন। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এর আগে হাইকোর্টে অপরাধ দমন শাখা বা ক্রাইম ব্রাঞ্চ দিয়ে তদন্ত করানোর আবেদন জানায়। রাজ্য সরকার ক্রাইম ব্রাঞ্চের মাধ্যমে তদন্ত করার আশ্বাস দিলে হাইকোর্ট সেই আবেদন নিষ্পত্তি করে দেয়। এখন দেখার, এই হাইপ্রোফাইল আর্থিক প্রতারণার জালে কে কে পড়েন।