বিজয়া দশমীতে ইলিশের আকাল? পুজোয় পাতে না-ও পড়তে পারে ‘মাছের রানি’, কেন বাড়ল দুশ্চিন্তা

বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব শারদোৎসব। আর এই উৎসবে অন্তত একটা দিন ইলিশ না পড়লে যেন পেটপুজোর বৃত্ত সম্পূর্ণ হয় না! বিজয়া দশমীতে জোড়া ইলিশ পাতে তোলার একটি রীতিও রয়েছে বহু বাঙালি পরিবারে। এমনকি, কিছু পারিবারিক পুজোয় মায়ের ভোগেও এই মাছ দেওয়ার চল আছে। তাই উৎসবের দিনগুলিতে ইলিশের চাহিদা তুঙ্গে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু এবার সেই চাহিদার সঙ্গে জোগান না থাকার আশঙ্কাই প্রবল হচ্ছে। পুজার সময় বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইলিশ আমদানি নিয়ে তৈরি হয়েছে বড় সংশয়

কারণ? নিম্নচাপের জেরে সমুদ্র এখন উত্তাল! প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে গভীর সমুদ্র থেকে সব ট্রলার উপকূলে ফিরে এসেছে। কাকদ্বীপ এলাকার মৎস্যজীবী রাখাল বিশ্বাস জানিয়েছেন, “সমুদ্রে কোথাও দাঁড়িয়ে জাল ফেলাই যাচ্ছে না। বড় বড় ঢেউয়ের ধাক্কায় ট্রলার সরে যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে সব ট্রলার উপকূলে ফিরতে বাধ্য হচ্ছে।”

তাঁরা জানাচ্ছেন, পুজোর দিনগুলিতে এমনিতেই কেউ ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যান না। পুজোর পরে আবার সবাই পাড়ি দেবেন। ফলে, এবার শারদোৎসবে বাংলার ইলিশ পাওয়ার আর কোনও সম্ভাবনা নেই। সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্রের কথায়, “গত বছর মৎস্যজীবীরা সপ্তমী পর্যন্ত মাছ ধরেছিলেন। কিন্তু এবছর নিম্নচাপের জন্য তাঁদের অনেক আগেই ফিরতে হলো। সেভাবে ইলিশও মেলেনি।”

এদিকে, বাংলাদেশ থেকে আসা ইলিশ নিয়েও তৈরি হয়েছে জটিলতা। খবর অনুযায়ী, সেই ইলিশের দাম বেশি হলেও আকার ছোট হওয়ার কারণে পাইকাররা তা তুলতে চাইছেন না। ফলে, বড় বাজার বাদ দিলে ছোট খুচরো বাজারে বাংলাদেশের ইলিশও এখন অমিল

সব মিলিয়ে একটা বড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে— এবার কি পুজোয় বাঙালির পাতে ইলিশ পড়বে না? বিজয়া দশমীর সেই বহু পুরনো রীতি এবার কীভাবে পালিত হবে, সেই দিকেই তাকিয়ে আছেন উৎসবপ্রিয় বাঙালিরা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *