২৬ লাখ টাকা রোজগার করেও মাস শেষে পকেট ফাঁকা, এক কর্মীর হিসেব শুনলে চোখ কপালে উঠবে – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

বাৎসরিক ২৬ লক্ষ টাকা বেতন! আপাতদৃষ্টিতে এমন রোজগারে বিলাসবহুল জীবনযাপনই স্বাভাবিক বলে মনে হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক এক ঘটনা সেই প্রচলিত ধারণাকে সম্পূর্ণভাবে পাল্টে দিয়েছে। সমাজমাধ্যমে বেঙ্গালুরুর এক বাসিন্দার আর্থিক হিসাব-নিকাশ ভাইরাল হওয়ার পর উঠে এসেছে এক ভিন্ন চিত্র। বিশাল মাইনে পাওয়া সত্ত্বেও মাসের শেষে তাঁর কার্যত ‘হাতে কিছুই থাকছে না’।

ওই ব্যক্তি যখন তাঁর ২৬ লক্ষ টাকার বেতনের আসল চিত্রটি তুলে ধরেন এবং নিজের আর্থিক সঙ্কটের কথা জানান, তখন অনেকেই বিস্মিত হন। তাঁর অভিযোগ, প্যাকেজ শুনতে বড় লাগলেও বাস্তব পরিস্থিতি কঠিন। তিনি মাস শেষে তাঁর বেতনের যে বিশ্লেষণ দিয়েছেন, তা বহু উচ্চ বেতনের কর্মীর কঠিন বাস্তবকেই প্রতিফলিত করে।

কীভাবে ফাঁকা হচ্ছে পকেট?

ওই ব্যক্তি জানান, বছরে ২৬ লক্ষ টাকা রোজগার হলেও, কয়েকটি খাতে বিপুল অর্থ বেরিয়ে যাচ্ছে।

  • আয়করের বোঝা: বেতনের প্রায় ৩০ শতাংশ, অর্থাৎ বছরে প্রায় ৬-৭ লক্ষ টাকা সরাসরি আয়কর বাবদ কেটে নেওয়া হয়।
  • মেট্রো শহরের ভাড়া: তিনি বেঙ্গালুরুর মতো মেট্রো শহরে থাকেন, যেখানে একটি ভালো ২বিএইচকে ফ্ল্যাটের মাসিক ভাড়া বাবদ খরচ হয় ৫০,০০০ থেকে ৬০,০০০ টাকা।
  • সন্তানদের শিক্ষা: দুই সন্তানের ভালো স্কুলের মাসিক বেতন বাবদ খরচ হয় ৩০,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকা।
  • ইএমআই: বাড়ি এবং গাড়ির লোনের কিস্তি (ইএমআই) বাবদ প্রতি মাসে চলে যায় ৬০,০০০ থেকে ৭০,০০০ টাকা।
  • পারিবারিক দায়িত্ব: এর বাইরে রয়েছে বাবা-মায়ের স্বাস্থ্য খরচ, সংসার চালানোর অন্যান্য ব্যয়, গ্রসারি, পেট্রোল ও সামান্য সঞ্চয়।

তাঁর দাবি, এই সব খরচ মেটানোর পর মাস শেষে হাতে সাকুল্যে কয়েক হাজার টাকা পড়ে থাকে। তিনি নিজেকে শুধু টাকা রোজগারের যন্ত্র বলে মনে করছেন, যিনি অনেক উপার্জন করেও জীবন উপভোগ করতে পারছেন না।

এই ঘটনাটি সেই লক্ষ লক্ষ পেশাদারদের প্রতিনিধিত্ব করে, যারা বড় শহরে উচ্চ বেতন উপার্জন করেও আকাশছোঁয়া জীবনযাত্রার খরচ, বর্ধিত করের চাপ এবং ঋণের বোঝায় জর্জরিত। এই বাস্তবতা প্রমাণ করে যে শুধুমাত্র বেতনের অঙ্কটাই সব নয়; মাস শেষে পকেটে কত টাকা থাকে এবং সেই টাকায় জীবন কতটা সুখের হয়, সেটাই আসল বিষয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *