বুড়ো বয়সেও তারুণ্য ধরে রাখতে চান! রাতে মাত্র ১ চামচ খান এই বীজ – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
এই দ্রুত গতির জীবনে এবং অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে মানুষের মধ্যে সময়ের আগেই বার্ধক্যের লক্ষণ দেখা দিচ্ছে। অনেকেই চান দীর্ঘকাল ধরে নিজেদের তরুণ ও সতেজ রাখতে, কিন্তু ত্বকের বলিরেখা, শরীরের দুর্বলতা, বা চামড়ার ঔজ্জ্বল্য কমে যাওয়ার মতো সমস্যা কম বয়সেই প্রকট হচ্ছে। যদিও বাজারে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা প্রচলিত আছে, তবে একটি ঘরোয়া উপায় রয়েছে যা আপনার এই ইচ্ছা পূরণে সহায়ক হতে পারে।
দীর্ঘকাল তরুণ থাকার সহজ উপায়
এই বিশেষ উপায়টি হলো আদা বাটা (Ajwain)। এটি আপনার দীর্ঘকাল ধরে তারুণ্য ধরে রাখার জন্য একটি সহজ ও কার্যকর সমাধান।
- ব্যবহার বিধি প্রতিদিন রাতে শোবার আগে এক চামচ আদা বাটা খেয়ে এক গ্লাস গরম জল পান করুন।
উপকারিতা
এই অভ্যাসের ফলে আপনার ত্বকের বলিরেখা হ্রাস পাবে, যা আপনাকে তরুণ দেখাতে সাহায্য করবে। একই সাথে, এটি আপনার শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করবে এবং হজম ক্ষমতা বাড়াবে। নিয়মিত গরম জলের সাথে আদা বাটা সেবনে পেটের প্রায় সব ধরনের রোগ দূর হয়।
অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতা
আদা বাটা শুধু তারুণ্য ধরে রাখতে নয়, আরও বহু রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে। আয়ুর্বেদে এটিকে ‘একা যমানী শতমন্ন পাচিকা’ বলা হয়েছে, অর্থাৎ এটি শত প্রকারের খাদ্য হজম করার ক্ষমতা রাখে।
- পেটের সমস্যা আদা বাটা, সৈন্ধব লবণ, হরিতকি ও সঁুঠের সমান পরিমাণ গুঁড়ো গরম জলের সাথে ১ থেকে ২ গ্রাম পরিমাণে সেবন করলে পেটের ব্যথা দূর হয়। এটি গ্যাস, পেট ফাঁপা, কৃমি, কফ ও বায়ুজনিত সমস্যাতেও উপকারি।
- কালো দাগ ও ব্রণ ২৫ গ্রাম দেশি আদা বাটা গুঁড়ো ২৫ গ্রাম দইয়ের সাথে মিশিয়ে রাতে মুখে লাগিয়ে সকালে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেললে মুখের কালো দাগ দূর হয়।
- যৌথ্য ব্যথা (গাউট) আদা বাটার গুঁড়ো একটি কাপড়ে বেঁধে গরম করে ব্যথার জায়গায় সেঁক দিলে জয়েন্টের ব্যথা থেকে মুক্তি মেলে।
- হজমে সহায়তা খাবারের পর সামান্য আদা বাটা চিবিয়ে খেলে হজম শক্তি বাড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আদা বাটা পাচক, রুচিকর, উষ্ণ, তিক্ত, অগ্নি উদ্দীপক এবং হৃদয়ের জন্য হিতকর। তবে মনে রাখবেন, এটি উষ্ণ প্রকৃতির হওয়ায় অত্যন্ত গরম প্রকৃতির লোকেদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। যেকোনো গুরুতর অসুস্থতায় ঘরোয়া প্রতিকারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আদা বাটার আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার
আদা বাটা বহু রোগের উপশমে সাহায্য করে। নিচে এর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার তুলে ধরা হলো
- কাশির নিরাময় এক চামচ আদা বাটা ভালো করে চিবিয়ে গরম জল পান করলে কাশি কমে। রাতে শোবার সময় পানের পাতায় আদা বাটা মুড়ে চিবিয়ে খেলেও উপকার পাওয়া যায়।
- বাচ্চাদের কৃমি আদা বাটার প্রায় আধা গ্রাম গুঁড়ো সমপরিমাণ কালো লবণের সাথে মিশিয়ে রাতে শোবার সময় গরম জল দিয়ে শিশুদের খাওয়ালে পেটের কৃমি মরে যায়।
- বমি ও ডায়রিয়া আদা বাটা, পুদিনা, দেশি কর্পূর এবং এলাচের রস একত্রে মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার খেলে বমি ও পাতলা পায়খানা বন্ধ হতে পারে।
- মাসিক-সংক্রান্ত সমস্যা ১০ গ্রাম আদা বাটা এবং ৫০ গ্রাম পুরোনো গুড় ২০০ মিলিলিটার জলে ফুটিয়ে সকালে ও সন্ধ্যায় সেবন করলে মাসিক স্রাব পরিষ্কার হয় এবং বন্ধ মাসিক পুনরায় শুরু হয়।
- স্থূলতা (মেদ) হ্রাস ২০ গ্রাম আদা বাটা, ২০ গ্রাম সৈন্ধব লবণ, ২০ গ্রাম জিরা এবং ২০ গ্রাম কালো মরিচ একসাথে গুঁড়ো করে নিয়মিত সকালে খালি পেটে ঘোলের সাথে খেলে শরীরের চর্বি কমে এবং স্থূলতা দূর হয়।
আদা বাটা এমন একটি শক্তিশালী মশলা, যা রান্নাঘরের এক লুকানো চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত। এটি শরীরের একাধিক সমস্যা মোকাবিলায় সহায়তা করে এবং এর অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে।