কলিযুগে কী হবে? শ্রীকৃষ্ণের বলা সেই ৫টি ভবিষ্যদ্বাণী, যা আজও সত্য – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
মহাকাব্য মহাভারতের সময়কালে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কলিযুগ সম্পর্কে যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, তা বর্তমানেও প্রাসঙ্গিক বলে মনে করেন বহু ধর্মপ্রাণ মানুষ। ধর্মরাজ যুধিষ্ঠিরের প্রশ্নের উত্তরে শ্রীকৃষ্ণ সেই সময় পাঁচটি ঘটনার উল্লেখ করেছিলেন, যা ভবিষ্যতের গতিপথ নির্দেশ করে।
মহাভারতে বর্ণিত কাহিনি অনুসারে, পাশাখেলায় সর্বস্ব হারানোর পর পাণ্ডবরা যখন বনবাসে যাচ্ছিলেন, তখন যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণকে কলিযুগে কী কী ঘটবে, তা জানতে চান। উত্তরে শ্রীকৃষ্ণ পাণ্ডবদের বনে গিয়ে দৃশ্য দেখে সন্ধ্যায় তাঁকে জানাতে বলেন। পাণ্ডবদের দেখা সেই দৃশ্যগুলির ব্যাখ্যায় শ্রীকৃষ্ণ কলিযুগের প্রকৃতি বর্ণনা করেন:
১. সর্বত্র শোষণ: যুধিষ্ঠির বনে দুই শুঁড়যুক্ত হাতি দেখতে পান। শ্রীকৃষ্ণ এর ব্যাখ্যায় বলেন, কলিযুগে শাসনভার এমন মানুষের হাতে থাকবে, যারা মুখে এক কথা বলবেন এবং কাজে তার উল্টোটা করবেন। শাসকরা উভয় দিক থেকেই সাধারণ মানুষের উপর শোষণ চালাবেন।
২. কপট ধার্মিকতা: অর্জুন দেখেন একটি পাখি যার ডানায় বেদের শ্লোক লেখা, কিন্তু সে মরা পশুর মাংস খাচ্ছে। শ্রীকৃষ্ণ ব্যাখ্যা করেন, কলিযুগে যারা নিজেদের জ্ঞানী বা ধার্মিক বলে প্রচার করবেন, তাদের আসল আচরণ হবে পাশবিক। তারা কেবল অন্যের সম্পত্তির দিকেই লোভীর দৃষ্টি রাখবেন।
৩. সন্তানের ভবিষ্যৎ বাধাগ্রস্ত: ভীম দেখেন একটি গরু তার বাছুরকে এমনভাবে চাটছে যে বাছুরের শরীর থেকে রক্ত বের হচ্ছে। শ্রীকৃষ্ণ এর অর্থ জানান যে, কলিযুগে মায়ের অতিরিক্ত মমতা সন্তানের স্বাভাবিক বিকাশে বাধা দেবে। অন্য কারও সন্তান সন্ন্যাসী হলে প্রশংসা করলেও, নিজের সন্তান সেই পথ ধরলে মা শোক করবেন।
৪. ধনীর উদাসীনতা: সহদেব দেখেন সাতটি ভরা কুয়োর মাঝে একটি কুয়ো সম্পূর্ণ খালি। শ্রীকৃষ্ণ হাসিমুখে বলেন, এর অর্থ হলো—কলিযুগে মানুষ চরম ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকবে। ধনীরা নিজেদের অনুষ্ঠানে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করলেও, পাশে কেউ অনাহারে মারা গেলেও তার সাহায্যে এগিয়ে আসবে না।
৫. হরি-নামেই মুক্তি: নকুল দেখেন একটি বিশাল পাথর বড় বড় গাছ ও নুড়ি-পাথরকে অতিক্রম করলেও একটি ছোট চারাগাছের ধাক্কায় থেমে যায়। শ্রীকৃষ্ণ বলেন, এর অর্থ হলো—কলিযুগে মানুষের মন এত নিচে নেমে যাবে যে তা ক্ষমতা বা সম্পদের দ্বারাও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। তবে একমাত্র ঈশ্বরের নাম বা ‘হরি-নাম’ জপেই মানুষের পতন বা অধঃপতন রোধ করা সম্ভব হবে।