এখানে, পুলিশে যোগদানের জন্য মেয়েদের তাদের কুমারীত্বের প্রমাণ দিতে হয় – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
গোটা বিশ্বে এমন কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটে, যা শুনলে চমকে যেতে হয়। তেমনই এক বিতর্কিত প্রক্রিয়ার খবর সামনে এসেছে ইন্দোনেশিয়া থেকে, যেখানে মহিলাদের পুলিশে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সম্মুখীন হতে হয় এক চরম কঠিন ও অমানবিক পরীক্ষার। সেখানে পুলিশে চাকরি পেতে গেলে মহিলাদের দিতে হয় তাঁদের কুমারিত্বের প্রমাণ।
ভারতে যেখানে নারীদের জন্য পুলিশে যোগ দেওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ, সেখানে ইন্দোনেশিয়াতে এই প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত কঠিন। ইন্দোনেশিয়ার নিয়ম অনুযায়ী, পুলিশে যোগ দিতে ইচ্ছুক মহিলাদের বয়স হতে হবে ১৭.৫ থেকে ২২ বছরের মধ্যে। একই সঙ্গে তাঁদের অবিবাহিত এবং উচ্চশিক্ষিত হওয়া আবশ্যক। এ পর্যন্ত নিয়মগুলি সাধারণ মনে হলেও, এর পরের ধাপটি সত্যিই উদ্বেগজনক ও বিতর্কিত।
পুলিশ বাহিনীতে যোগদানের আগে মহিলাদের ‘ভার্জিনিটি টেস্ট’ বা কুমারিত্ব পরীক্ষা দিতে হয়। এই পরীক্ষার মাধ্যমে মহিলাদের কুমারীত্ব যাচাই করা হয়। এই পরীক্ষাটি সাধারণত ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নামেও পরিচিত, যা সাধারণত ধর্ষণের শিকার হওয়া মহিলাদের ওপর করা হয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করানো আঙ্গুলের সংখ্যা দেখে ডাক্তাররা আন্দাজ করেন, ওই মহিলা সক্রিয় যৌন জীবনযাপন করেন কিনা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই পরীক্ষাকে অত্যন্ত অপমানজনক এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে। বিশ্বের বহু দেশেই এই ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’কে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও আশ্চর্যের বিষয়, ইন্দোনেশিয়াতে মহিলাদের পুলিশে নিয়োগের জন্য শুধুমাত্র শারীরিক সক্ষমতা বা শিক্ষাগত যোগ্যতাই যথেষ্ট নয়। তাঁদের বাছাই প্রক্রিয়ার সময় নিয়োগকারী পুরুষ কর্মকর্তাদের সামনে নিজেদের ‘সৌন্দর্যের প্রদর্শন’ও করতে হয়। জানা গেছে, এই বাছাই কমিটিতে কোনো মহিলা কর্মকর্তা থাকেন না, সবাই পুরুষ। এখানে সাধারণত সেই মেয়েদেরই নির্বাচন করা হয়, যাঁরা দেখতে সুন্দর।
ইন্দোনেশিয়ায় স্বাধীনতার পরে ১৯৪৬ সালে পুলিশ ফোর্স গঠিত হয়। কিন্তু আজও এই বিতর্কিত ও মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী পরীক্ষাটি মহিলাদের পুলিশে যোগদানের পথে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনা ইন্দোনেশিয়ার সমাজে মহিলাদের অবস্থান এবং পুলিশে যোগদানের ক্ষেত্রে তাঁদের ওপর হওয়া চাপ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলছে।