সরকার গড়লে পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের দ্বিগুণ ভাতা ও পেনশন: তেজস্বী যাদব – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
পাটনা: লোকসভা নির্বাচনের আগে বিহারের রাজনীতিতে ফের এক ‘প্রতিশ্রুতি বোমা’ ফেললেন রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-এর নেতা তেজস্বী যাদব। রবিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের এই অন্যতম মুখ ঘোষণা করলেন, যদি তাঁর জোট ক্ষমতায় আসে, তাহলে বিহারের পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের ভাতা দ্বিগুণ করা হবে। শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিনের দাবি মেনে তাঁদের জন্য চালু করা হবে পেনশন এবং ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিমার সুবিধা।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ভোট যত এগিয়ে আসছে, তত নিজস্ব ভোটব্যাংক সুরক্ষিত রাখা এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে নিজেদের দিকে টানার মরিয়া চেষ্টা করছে প্রধান দলগুলি। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তেজস্বীকে সামনে রেখে আরজেডি নেতৃত্বাধীন বিরোধী শিবির যে লড়াইতে নেমেছে, তার অন্যতম লক্ষ্য হল বিহারের গ্রামীণ এলাকায় নিজেদের সমর্থন আরও মজবুত করা। পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের বিশেষ সুবিধার টোপ দিয়ে তাদের সমর্থন আদায় করাই যে তেজস্বীর এই ঘোষণার প্রধান উদ্দেশ্য, তা স্পষ্ট।
আরজেডি নেতা এদিন সরাসরি পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের দীর্ঘদিনের দাবিকে সমর্থন করে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই পেনশনের দাবি তুলছেন পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা। সেকথা মাথায় রেখে তাঁদের ভাতা দ্বিগুণ করা হবে। তাঁরা পেনশনও পাবেন। মিলবে ৫০ লক্ষ টাকার বিমার সুবিধাও।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চলতি বছরের জুন মাসে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সরকার জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও মুখিয়াদের ভাতা বৃদ্ধি করার পর এবার তার থেকেও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন তেজস্বী। নীতীশের দেওয়া সুবিধাগুলিকে ছাপিয়ে গিয়ে তিনি দ্বিগুণ ভাতা ও পেনশনের প্রতিশ্রুতি দিলেন। শুধু পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরাই নন, একইসঙ্গে ক্ষৌরকার, ছুতোর এবং মৃৎশিল্পীদের পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সুদহীন ঋণ দেওয়ারও কথা ঘোষণা করেছেন তেজস্বী।
এদিকে, একই দিনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কাটিহারের এক সভা থেকে তেজস্বী ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়েও আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘ক্ষমতায় এলে এই আইনকে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলা হবে।’ এরপরই তেজস্বী অভিযোগ করেন, নীতীশ কুমারের প্রশ্রয়েই বিহারে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়াচ্ছে আরএসএস ও বিজেপি, যাদের তিনি ‘ভারত জ্বালাও পার্টি’ বলে কটাক্ষ করেন।
তেজস্বীর এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন বিজেপি সাংসদ মনোজ তিওয়ারি। তিনি পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, বিরোধীরা আসলে আমজনতার মধ্যে অযথা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তিনি তেজস্বীর উদ্দেশে বলেন, ‘ওদের নিজের ওজন বুঝে কথা বলা উচিত।’