বন্দে ভারতে বাধ্যতামূলক খাবার! অ্যাপে ‘নো ফুড’ অপশন উধাও, বাড়তি আর্থিক বোঝা নিয়ে ক্ষুব্ধ ট্রেনযাত্রীরা – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে (Vande Bharat Express) টিকিট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে বড়সড় বদল এনেছে রেল। এই বিলাসবহুল ট্রেনে এবার লাঞ্চ বা ডিনার নেওয়া কার্যত বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। এতদিন অ্যাপে টিকিট বুক করার সময় ‘নো ফুড’ অর্থাৎ ‘খাবার লাগবে না’ অপশনটি বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল, কিন্তু বর্তমানে আইআরসিটিসি (IRCTC) অ্যাপ থেকে সেই অপশনটি তুলে দেওয়া হয়েছে বলে যাত্রীদের দাবি। ফলে খাবার না চাইলেও, টিকিটের সঙ্গে খাবারের খরচ বাবদ অতিরিক্ত অর্থ দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

রেলের এই আচমকা সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বহু যাত্রী। তাঁদের বক্তব্য, এর ফলে যাত্রীদের উপর অতিরিক্ত আর্থিক বোঝা চাপানো হচ্ছে। যেমন, হাওড়া থেকে রামপুরহাট পর্যন্ত ‘নো ফুড’ অপশনে ভাড়া ছিল ৬১০ টাকা, যা এখন খাবার সহ বাধ্যতামূলকভাবে ৯১০ টাকা দিতে হচ্ছে। অর্থাৎ, মাথাপিছু প্রায় ৩১০ টাকা বেশি খরচ করতে হচ্ছে।

অনেকেই শারীরিক অসুস্থতা বা ব্যক্তিগত পছন্দের কারণে ট্রেনের খাবার এড়িয়ে চলেন এবং বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসেন। তাঁদের মতে, নতুন নিয়মে তাঁদের এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে এবং বিনা কারণে বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে।

যদিও আইআরসিটিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাঁদের ওয়েবসাইটে লগইন করলে এখনও ‘আই ডোন্ট ওয়ান্ট ফুড/বেভারেজ’ অপশনটি পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু স্মার্টফোন অ্যাপ ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন, অ্যাপে এই অপশনটি আসছে না। শুধু বন্দে ভারত নয়, রাজধানী বা শতাব্দী এক্সপ্রেসের মতো অন্যান্য বিলাসবহুল ট্রেনেও একই সমস্যা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

রামপুরহাটের এক আইআরসিটিসি এজেন্ট অনিল বোথরা বলেন, “আগে নো ফুড অপশন ছিল, কিন্তু এখন শুধুমাত্র ভেজ, নন-ভেজ, জৈন মিল ও ভেজ (ডায়াবেটিক) অপশন দেখা যাচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বন্দে ভারতের যাত্রী সংখ্যা কমে আসতে পারে, তাই এটি পুনর্বিবেচনা করা উচিত।”

রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ করবী বড়াল, যিনি সপ্তাহে দু’দিন বন্দে ভারতে যাতায়াত করেন, তিনি বলেন, “কিছু লোকের সুবিধা হলেও যারা পরিবার বা আত্মীয়স্বজন নিয়ে সফর করেন, তাদের প্রত্যেকের জন্য খাবার নেওয়া সম্ভব হয় না। এই সিদ্ধান্তের ফলে তাঁদের উপর বাড়তি বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হলো।”

পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত এই বিষয়ে জানান, খাবারের অপশন রেল কর্তৃপক্ষ দেখে না, এটি আইআরসিটিসি-র বিষয়। তবে আইআরসিটিসি-র কলকাতা অফিসে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও, কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। যাত্রীদের প্রশ্ন, ওয়েবসাইট নয়, অ্যাপে কেন তুলে নেওয়া হলো এই গুরুত্বপূর্ণ অপশন? এর পিছনে রেলের কী উদ্দেশ্য রয়েছে, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে জল্পনা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *