১ টাকার কয়েন তৈরি করতে সরকারের খরচ কত? জানলে চমকে উঠবেন – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

ভারতীয় মুদ্রাব্যবস্থায় এক টাকার একটি কয়েন তৈরি করতে সরকারের পকেট থেকে যাচ্ছে গায়ের দামের চেয়েও বেশি অর্থ। সম্প্রতি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (আরবিআই)-এর দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চাঞ্চল্যকর হিসাব উঠে এসেছে। এটি শুধুমাত্র কৌতূহল নয়, মুদ্রানীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকও বটে।

২০১৮ সালে আরবিআই একটি আরটিআই-এর জবাবে জানিয়েছিল, এক টাকার একটি কয়েন তৈরি করতে সরকারের খরচ হয় ১ টাকা ১১ পয়সা। অর্থাৎ, প্রতিবার একটি এক টাকার কয়েন তৈরি হলে সরকারের প্রায় ১১ পয়সা লোকসান হয়।

শুধুমাত্র ১ টাকার কয়েন নয়, অন্যান্য ধাতব মুদ্রা তৈরির ক্ষেত্রেও লোকসানের চিত্রটি প্রায় একইরকম:

  • ২ টাকার কয়েন: তৈরির খরচ ১ টাকা ২৮ পয়সা।
  • ৫ টাকার কয়েন: তৈরির খরচ ৩ টাকা ৬৯ পয়সা।
  • ১০ টাকার কয়েন: তৈরির পেছনে খরচ হয় ৫ টাকা ৫৪ পয়সা।

এই কয়েনগুলি সাধারণত মুম্বাই ও হায়দ্রাবাদের মতো প্রধান টাকশালগুলিতে ভারত সরকারের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান দ্বারা প্রস্তুত করা হয়। এক টাকার কয়েন স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি, যা দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করে।

কয়েন তৈরিতে লোকসান হলেও নোট ছাপানো সরকারের জন্য অনেক বেশি লাভজনক। যদিও এক টাকার নোট এবং সকল কয়েন ভারত সরকারের প্রতিষ্ঠান তৈরি করে, কিন্তু ২ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত নোট ছাপানোর দায়িত্ব আরবিআই-এর।

নোট ছাপানোর খরচ:

  • ১০০০টি ১০০ টাকার নোট ছাপাতে খরচ হয় ১,৭৭০ টাকা (প্রতি নোটে ১.৭৭ টাকা)।
  • ১০০০টি ৫০০ টাকার নোট ছাপাতে খরচ হয় ২,২৯০ টাকা (প্রতি নোটে ২.২৯ টাকা)।

অর্থাৎ, একটি ৫০০ টাকার নোট ছাপাতে খরচ হয় মাত্র ২ টাকা ২৯ পয়সা, যেখানে এর বাজার মূল্য ৫০০ টাকা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু কয়েন তৈরিতে সরকারকে আর্থিক লোকসান দিতে হলেও, মুদ্রাব্যবস্থায় দীর্ঘস্থায়িত্ব এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতেই কয়েন তৈরি করা হয়। কারণ কাগজের নোটের তুলনায় ধাতব মুদ্রা বহু বছর ধরে টিকে থাকে। এই লোকসান সত্ত্বেও কয়েন তৈরি করার পেছনে সরকারের একটি সুদূরপ্রসারী কৌশলগত ভাবনা কাজ করে, যা কেবল উৎপাদন খরচের ওপর নির্ভর করে না, বরং মুদ্রার দীর্ঘায়ুর গুরুত্ব বহন করে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *