কিডনি বিকল হওয়ার আগে চোখের এই ৫টি সংকেত কখনোই উপেক্ষা করবেন না! কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
কিডনি খারাপ হওয়ার প্রাথমিক সতর্কতা চোখে
আমাদের শরীরে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে অন্যতম হলো কিডনি। এটি রক্ত পরিশোধন করে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত জল বের করে দেওয়ার মতো জরুরি কাজ করে। তবে জীবনযাত্রার ভুলভ্রান্তি বা অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের কারণে কিডনির কার্যক্ষমতা কমতে শুরু করলে, তার প্রভাব শরীরের একাধিক অংশে দেখা যায়। বিস্ময়করভাবে, এই গুরুতর সমস্যার প্রাথমিক সতর্কবার্তাগুলির মধ্যে কিছু প্রায়শই আমাদের চোখে ধরা পড়ে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানাচ্ছেন, চোখ যেহেতু একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল অঙ্গ, তাই শরীরে টক্সিন জমা হলে বা খনিজ পদার্থের ভারসাম্য নষ্ট হলে তার সূক্ষ্ম পরিবর্তন চোখে দেখা যায়। এই লক্ষণগুলি সময়মতো চিনে নেওয়া জরুরি, নয়তো ভবিষ্যতে কিডনি ফেইলিওরের মতো মারাত্মক ঝুঁকি বাড়তে পারে।
চোখে দেখা যায় এমন ৫টি গুরুতর লক্ষণ
১. চোখের চারপাশে ফোলাভাব: সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর চোখের নিচের ফোলাভাব যদি সারাদিন লেগে থাকে, তবে তা কেবল ক্লান্তি বা ঘুমের অভাব নাও হতে পারে। কিডনির সমস্যা হলে শরীর থেকে প্রোটিন বেরিয়ে যেতে পারে (প্রোটিনুরিয়া) এবং শরীরে জল জমতে শুরু করে, যার ফলে চোখের চারপাশে এই ধরনের দীর্ঘস্থায়ী ফোলাভাব বা ‘পাফি আইজ’ দেখা যায়।
২. ঝাপসা দেখা বা দ্বিগুণ দৃষ্টি: হঠাৎ করে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হওয়া, ফোকাস করতে অসুবিধা হওয়া বা একই জিনিস দু’বার দেখা—এগুলো উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের লক্ষণ হতে পারে। এই দুটি রোগই কিডনির ক্ষতির অন্যতম প্রধান কারণ। রক্তচাপ বা সুগারের অনিয়ম রেটিনার সূক্ষ্ম রক্তনালিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৩. অতিরিক্ত শুষ্কতা, চুলকানি বা লালচে ভাব: যদি আপনার চোখে ঘনঘন শুষ্কতা, চুলকানি বা জ্বালা অনুভূত হয়, কোনো কারণ ছাড়াই চোখ লাল হয়ে যায় বা রক্তাভ দেখায়, তবে তা কিডনির সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। টক্সিন জমা হওয়ার কারণে বা অটোইমিউন রোগের প্রভাবে চোখে প্রদাহ সৃষ্টি হয়ে এমন হতে পারে।
৪. রং চিনতে সমস্যা: হঠাৎ করে নীল, হলুদ বা ধূসর রং চিনতে অসুবিধা হওয়াও হতে পারে কিডনি রোগের একটি নীরব লক্ষণ। দীর্ঘদিনের কিডনি সমস্যা বা উচ্চ রক্তচাপ অপটিক নার্ভকে ক্ষতিগ্রস্ত করলে রং বোঝার ক্ষমতা কমে আসতে পারে।
৫. ক্লান্তি ও ডার্ক সার্কেল: কিডনির সমস্যায় ঘুম ব্যাহত হয়, পাশাপাশি রক্তে টক্সিন জমে যাওয়ায় সারাদিন অতিরিক্ত ক্লান্তি লাগে। এর ফলে চোখের নিচে স্থায়ী ডার্ক সার্কেল তৈরি হতে পারে, যা কেবল সৌন্দর্য সমস্যা নয়, শরীরের ভেতরের সমস্যারও ইঙ্গিত।
এই লক্ষণগুলির কোনোটি যদি আপনার চোখে নিয়মিত দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া এবং চোখের পাশাপাশি কিডনিরও প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানো উচিত। সচেতনতা ও সময়মতো চিকিৎসা শুরু করাই গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়ানোর মূল চাবিকাঠি।