শীত আসার আগেই পান করুন এই ৫ জাদু পানীয়, ত্বকে আসবে ‘ন্যাচারাল গ্লো’! কী কী মেশাবেন, জানুন রহস্য – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
শীতের আগমন মানেই ত্বকের শুষ্কতা আর নিষ্প্রাণ ভাব। কিন্তু কিছু সহজ ঘরোয়া পানীয় দিয়ে আপনি সহজেই এই সমস্যাকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেন। সঠিক ‘মর্নিং ডিটক্স’ কেবল শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিনই বের করে না, বরং ত্বকের আর্দ্রতা, ইলাস্টিসিটি এবং উজ্জ্বলতা ধরে রাখতেও সাহায্য করে। আপনি যদি এই শীতেও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, টানটান ত্বক চান, তাহলে দেরি না করে জেনে নিন সেই ৫টি অব্যর্থ পানীয় কী কী, যা সকালে খালি পেটে পান করলে আপনার ত্বকে আসবে প্রাকৃতিক ঔজ্জ্বল্য।
১. উষ্ণ জলে মধু-লেবু
এই পানীয়টি খুবই পরিচিত হলেও এর উপকারিতা ব্যাপক। ভিটামিন-C সমৃদ্ধ লেবু ত্বকের কোষের মেরামত ও নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে। অন্যদিকে, মধুর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ ত্বককে বাইরের সংক্রমণ ও ব্রণর ঝুঁকি থেকে বাঁচায়।
কীভাবে তৈরি করবেন: এক গ্লাস ঈষদুষ্ণ (খুব গরম নয়) জলে অর্ধেক লেবুর রস ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। সকালে খালি পেটে পান করুন।
সতর্কতা: ডায়াবিটিসের রোগীরা মধু ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
২. অ্যালোভেরা জুস
অ্যালোভেরা হল প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ ময়েশ্চারাইজার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস। এটি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনকে সমর্থন করে এবং দ্রুত আরোগ্য লাভে সাহায্য করে।
কীভাবে তৈরি করবেন: এক বড় চামচ খাঁটি অ্যালোভেরা জেল (পাতা থেকে বের করা) ২৫০ মিলিলিটার জলে মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন।
উপযোগিতা: সপ্তাহে ৩-৪ দিন পান করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত সেবন পরিপাকতন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৩. গাজর ও বীটরুটের জুস
ত্বকের গ্লো বাড়ানোর জন্য এই জুসের জুড়ি মেলা ভার। গাজরে থাকা ভিটামিন-A এবং বিটা-ক্যারোটিন ত্বকের বার্ধক্যের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। আর আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর বীটরুট রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, যার ফলে ত্বক পায় স্বাস্থ্যকর আভা।
কীভাবে তৈরি করবেন: একটি মাঝারি আকারের গাজর ও একটি ছোট বীটরুট ভালোভাবে ধুয়ে জুসারে রস বের করে নিন। স্বাদের জন্য অল্প লেবুর রস মেশাতে পারেন।
৪. শসা-পালং শাকের গ্রিন স্মুদি
এটি একটি দুর্দান্ত ডিটক্সিফাইং পানীয়। পালং শাক হল ভিটামিন-C, E এবং ফোলেটের চমৎকার উৎস। অন্যদিকে, শসা ত্বকে প্রয়োজনীয় হাইড্রেশন এবং শীতলতা যোগায়। এই মিশ্রণ ত্বককে পরিষ্কার, আর্দ্র ও ডিটক্সিফাই করতে সহায়ক।
কীভাবে তৈরি করবেন: ১ কাপ পালং শাক, অর্ধেক শসা এবং ১ কাপ জল বা ডাবের জল দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করুন। সামান্য আপেল বা লেবু যোগ করলে স্বাদ বাড়বে।
৫. চিয়া সিড ওয়াটার
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ চিয়া বীজ ত্বককে ভিতর থেকে আর্দ্র রাখে এবং বলিরেখা থেকে সুরক্ষা দিতে পারে।
কীভাবে তৈরি করবেন: এক গ্লাস জলে ১ থেকে ২ চা চামচ চিয়া বীজ মিশিয়ে ১০-১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। বীজগুলো জেলের মতো হয়ে গেলে পান করুন।
সতর্কতা: শুকনো অবস্থায় চিয়া বীজ খাওয়া উচিত নয়; সবসময় ভিজিয়ে বা জলে মিশিয়ে পান করুন।
মনে রাখবেন: এই পানীয়গুলি একা ম্যাজিক দেখাবে না। পর্যাপ্ত পরিমাণে সাধারণ জল পান করা (দিনে ২-৩ লিটার), সুষম খাবার ও ভালো ঘুমও সমান জরুরি। কোনো দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা বা গর্ভাবস্থায় নতুন পানীয় শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিয়মিত পান ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রাই আপনার ত্বকের প্রকৃত রহস্য।