সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা! কুকুর কামড়ালে রক্ষা পেতে ৩টি কড়া নির্দেশ, নড়েচড়ে বসতে হবে সব রাজ্যকে – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
ন্যাশনাল ডেস্ক: দেশে লাগামহীনভাবে বাড়ছে আওয়ারা কুকুরের সংখ্যা, যা এখন সাধারণ মানুষের জন্য এক ভয়ংকর সমস্যা। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে বছরে ৩৭ লক্ষের বেশি মানুষ কুকুরের কামড়ের শিকার হচ্ছেন। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা (Suo Motu) গ্রহণ করে কঠোর নির্দেশ দিয়েছে দেশের সুপ্রিম কোর্ট।
ভারতের বদনাম হচ্ছে, কড়া বার্তা আদালতের
এই সমস্যার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মামলার আবেদনকারী বিজয় গোয়েল জানিয়েছেন, দেশজুড়ে ১২ কোটিরও বেশি কুকুর রয়েছে, যার মধ্যে একার দিল্লিতেই ১০ লক্ষের বেশি পথকুকুর ঘুরে বেড়ায়। সরকারি তথ্য বলছে, প্রতি বছর এই কুকুরের কামড়ে আক্রান্তদের তালিকায় রয়েছেন নারী, শিশু ও বয়স্করা। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে স্টেডিয়ামগুলিতেও কোচেরা কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন।
বিচার চলাকালীন সুপ্রিম কোর্ট চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে, প্রতিদিন সংবাদপত্রে কুকুরের কামড়ানোর খবর প্রকাশিত হচ্ছে। আদালতের মতে, এই সমস্যার কারণে বিশ্বজুড়ে ভারতের বদনাম হচ্ছে। বিচারপতির কথায়, সিঙ্গাপুর, জার্মানি বা আমেরিকার মতো দেশে রাস্তায় এভাবে কুকুরের কামড়ানোর ঘটনা দেখা যায় না।
সুপ্রিম কোর্টের ৩টি কড়া নির্দেশ: বাধ্যতামূলক নসবন্দি থেকে শেল্টার
জনগণের সুরক্ষার স্বার্থে এই সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চ আদালত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ও কঠোর নির্দেশ জারি করেছে:
- নসবন্দি বাধ্যতামূলক: সব পথকুকুরের অবিলম্বে নসবন্দি বা স্টেরিলাইজেশন করতে হবে।
- খাবার দেওয়ার নির্দিষ্ট স্থান: অ্যাপার্টমেন্ট বা সোসাইটির মধ্যে যেখানে সেখানে কুকুরদের খাবার দেওয়া যাবে না। কুকুরদের জন্য আলাদা ও নির্দিষ্ট স্থান তৈরি করতে হবে, যাতে তারা প্রকাশ্যে ঘুরে না বেড়ায়।
- আক্রমণাত্মক কুকুরদের জন্য ব্যবস্থা: যে কুকুরগুলির আচরণ আক্রমণাত্মক, সেগুলিকে খাঁচায় বন্দি করে সরকারি বা অনুমোদিত শেল্টারে রাখতে হবে।
রাজ্যগুলির উপর চাপ বাড়াল আদালত, হাজিরার নির্দেশ
আদালত এই নির্দেশগুলি কার্যকর করে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে সব রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু দেখা যায়, হাতেগোনা মাত্র তিনটি রাজ্য সাড়া দিয়েছে। এরপরই আদালত চরম কড়া অবস্থান নিয়ে সব রাজ্যের মুখ্য সচিবদের আগামী ৩ নভেম্বর ব্যক্তিগতভাবে সশরীরে হাজির হয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
আবেদনকারী বিজয় গোয়েল জোর দিয়ে বলেছেন, এই সমস্যা শুধু দিল্লির নয়, গোটা দেশের। আদালতের নির্দেশনা যেন কঠোরভাবে কার্যকর হয়, সেটাই তাঁর মূল আবেদন। তিনি মনে করিয়ে দেন, জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আদালতের হস্তক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত দেশজুড়ে স্বাগত জানালেও নসবন্দি ও শেল্টার তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ ও পরিকাঠামোর অভাব একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আদালতের এই কড়া পদক্ষেপের পর, আগামী শুনানিতে রাজ্যগুলির রিপোর্ট খতিয়ে দেখে আরও শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।