তুলসী দেবীকে অভিশাপ দিয়ে গাছে পরিণত করা হয়েছিল, জেনে নিন পৌরাণিক কাহিনী – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ
দেব-দেবীর নানা লীলা এবং পৌরাণিক কাহিনিতে সমৃদ্ধ আমাদের ধর্ম। এর মধ্যে তুলসী গাছকে অত্যন্ত পবিত্র ও ঐশ্বরিক মনে করা হয়। হিন্দু ধর্মে প্রতি বছর কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথিতে তুলসী বিবাহ উৎসব পালন করা হয়। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এই দিনেই ভগবান বিষ্ণু চার মাসের যোগনিদ্রা বা চতুর্মাস শেষ করে জেগে ওঠেন। বিষ্ণুর জাগরণের পরই শুভ কাজ শুরু হয়।
তবে একটি বিষয় অনেকেরই জানা, তা হলো শুভ কাজে তুলসী গাছের গুরুত্ব অপরিসীম হলেও গণেশ পূজায় কখনও তুলসী ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু কেন এমন হয়? এর নেপথ্যে রয়েছে এক চাঞ্চল্যকর পৌরাণিক কাহিনি।
পুরাণ অনুসারে, দেবী তুলসী একদা সিদ্ধিদাতা গণেশকে ভালোবেসে ফেলেন এবং তাঁকে বিয়ে করার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করেন। এক দিন তুলসী সরাসরি গণেশের কাছে গিয়ে নিজের মনের কথা প্রকাশ করে তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু গণেশ বিনয়ের সঙ্গে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। গণেশের এই প্রত্যাখ্যান তুলসীর কাছে অত্যন্ত অপমানজনক ও দুঃখজনক বলে মনে হয়।
এর ফলস্বরূপ, তুলসী ক্রোধিত হয়ে গণেশকে এই বলে অভিশাপ দেন যে তাঁর জীবনে দুটি বিয়ে হবে। এই অভিশাপের কারণেই গণেশ রিদ্ধি ও সিদ্ধি নামক দুই বোনকে বিবাহ করেন। অন্য দিকে, তুলসীর এই অভিশাপে গণপতিও অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হন এবং তিনিও তুলসীকে অভিশাপ দেন যে তাঁর বিবাহ হবে কোনো এক রাক্ষস রাজার সাথে। এই অভিশাপের ফলেই দেবী তুলসীর সঙ্গে রাক্ষস বংশের রাজা জলন্ধরের বিবাহ হয়।
পুরাণে বলা হয়েছে, গণেশকে অভিশাপ দেওয়ার পর তুলসী নিজের ভুল বুঝতে পেরে সিদ্ধিদাতার কাছে ক্ষমা চান। তখন সিদ্ধিদাতা শান্ত হন এবং তুলসীকে বলেন, সময়ের সাথে সাথে তিনি বৃক্ষ রূপে সকলের পূজিতা হবেন। তিনি ধর্মীয় আচার ও আধ্যাত্মিক বিশুদ্ধতার প্রতীক রূপে গণ্য হবেন। তবে গণেশ স্পষ্ট করে দেন যে তাঁর পূজায় কখনও তুলসী পাতা ব্যবহার করা হবে না। সেই কারণেই আজও গণেশ পূজায় তুলসীকে ব্যবহার করা হয় না।