৭ বছর ধরে স্বেচ্ছায় সম্পর্ক, বিয়ে না করায় কি ধর্ষণ? হাইকোর্টের রায়ে তোলপাড়! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

ছত্তিশগড় হাইকোর্ট সম্প্রতি একটি ধর্ষণ মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক যুবকের সাজা বাতিল করে তাঁকে জামিন দিয়েছে। আদালত এই মামলায় মন্তব্য করে যে, পারস্পরিক সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর শুধুমাত্র বিয়ের প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করাটা ধর্ষণ নয়। আদালত দেখিয়েছে, এটি বিয়ের প্রলোভনের ভিত্তিতে মিথ্যা অভিযোগ নয়, বরং একটি প্রেম-সম্পর্কের পরিণতি।

আদালতের প্রশ্ন: ৭ বছর ধরে প্রেম, তবে কেন ধর্ষণ?

বিচারপতি নরেশ চন্দ্রবংশীর বেঞ্চ মামলার শুনানিতে পর্যবেক্ষণ করে যে, নির্যাতিতা দীর্ঘদিন ধরে (প্রায় ৭ বছর) অভিযুক্ত রূপেশ কুমার পুরীর সঙ্গে নিজের ইচ্ছায় সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন এবং সাবালিকা ছিলেন। আদালত উল্লেখ করেছে যে, এই ক্ষেত্রে শারীরিক সম্পর্ক সম্মতিতে তৈরি হয়েছিল, ফলে এটিকে ধর্ষণ বলা যায় না।

ঘটনাটি কী ছিল?

২০২০ সালে বস্তার জেলার ২৫ বছর বয়সী রূপেশ কুমার পুরীর বিরুদ্ধে এক যুবতী অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি জানান, ২৮ জুন তাঁর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। তবে অভিযোগ, তার একদিন আগে অর্থাৎ ২৭ জুন রূপেশ তাঁকে নিজের বাড়িতে ডেকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন।

এরপর রূপেশ প্রায় দুই মাস ধরে তাঁকে নিজের বাড়িতে রেখেছিলেন। কিন্তু পরে হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন এবং বিয়ে করতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ। এই অভিযোগের ভিত্তিতে রূপেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬(২)(এন) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। ২০২২ সালে জগদলপুরের একটি ফাস্ট-ট্র্যাক আদালত রূপেশকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০,০০০ টাকা জরিমানা করে।

হাইকোর্টের রায়: বাতিল হলো সাজা, পেলেন জামিন

হাইকোর্ট ফাস্ট-ট্র্যাক কোর্টের সেই রায় বাতিল করে রূপেশকে জামিন দিয়েছে। বিচারপতি চন্দ্রবংশী সুপ্রিম কোর্টের একটি মামলার কথা উল্লেখ করে বলেন, শুধুমাত্র বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলেই সেটা ধর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হবে না, যদি না এটা স্পষ্ট হয় যে অভিযুক্তের শুরু থেকেই বিয়ে করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে হাইকোর্ট রূপেশ কুমার পুরীকে সমস্ত অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *