ধর্মনিরপেক্ষতা আর নয়, সনাতন ধর্মের পরিচয়! মুস্তাফাবাদকে ‘কবীর ধাম’ করার ঘোষণা যোগীর – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খিরিতে মুস্তফাবাদের নাম পরিবর্তন করে ‘কবীরধাম’ করার ঐতিহাসিক ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। রবিবার বিশ্ব কল্যাণ আশ্রমে ‘স্মৃতি প্রাকট্যোৎসব মেলা-২০২৫’-এ যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “সেক্যুলারিজমের” নামে পরিচয় মুছে ফেলার যুগ এখন শেষ।

মুস্তফাবাদের নতুন নাম হিসেবে ‘কবীরধাম’ ঘোষণার সময় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ স্পষ্টভাবে বলেন, ডবল ইঞ্জিন সরকারে এখন আর সেই দিন নেই যখন “সেক্যুলারিজমের” দোহাই দিয়ে আমাদের ঐতিহ্যকে মুছে ফেলা হতো। তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাজ্য সরকার এখন সংস্কৃতি ও শ্রদ্ধার সংরক্ষণে অর্থ ব্যয় করছে, যেখানে আগেকার সরকারে এই অর্থ কবরস্থানের চার দেওয়াল বানাতে খরচ হতো।

যোগী আদিত্যনাথ বলেন, পূর্বে অযোধ্যা ফৈজাবাদ, প্রয়াগরাজ ইলাহাবাদ এবং কবিরধাম মুস্তফা হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু এখন উত্তরপ্রদেশ তার আসল পরিচয় ফিরে পাচ্ছে।

জাতপাতের ঊর্ধ্বে কবীরের বাণী

মুখ্যমন্ত্রী তার ভাষণে সন্ত কবীরদাসের শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কবীরদাসজির নির্গুণ ভক্তির ধারা আজও সমাজকে পথ দেখাচ্ছে। “তাঁর দোঁহা ‘জাতি পাতি পুছে ন কোই, হরি কো ভজে সো হরি কা হোই’ আজও সামাজিক ঐক্যের সবচেয়ে বড় বার্তা,” বলেন যোগী। তিনি আরও যোগ করেন, কবীরদাস জাতিভেদ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সমাজকে নতুন ভাবনা শিখিয়েছিলেন।

সমাধানের একমাত্র পথ রাষ্ট্রভক্তি

দেশের ঐক্য ভাঙার চেষ্টা করা শক্তির বিরুদ্ধে সাবধান থাকতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “যারা ভারতের ঐক্যে আঘাত করে, তারা দেশের আত্মার ওপর আঘাত করে। রাষ্ট্রভক্তিই প্রতিটি সমস্যার সমাধান।” তিনি আরও বলেন, এই ভূমি কেবল মাটি নয়, আমাদের মাতৃভূমি। इसकी সেবা করাই আসল উপাসনা।

মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ২০১৪ সালের আগে দেশ এক ‘পরিচয়ের সংকটে’ ভুগছিল, কিন্তু বর্তমানে ভারত বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি এবং খুব দ্রুত তৃতীয় অর্থনৈতিক মহাশক্তি হতে চলেছে।

সীমান্তবর্তী জেলায় উন্নয়নের নতুন ধারা

লখিমপুর খিরির মতো সীমান্তবর্তী জেলার উন্নয়নে জোর দিয়ে যোগী জানান, এখানে মেডিকেল কলেজ তৈরি হয়েছে, বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ চলছে এবং ইকো-ট্যুরিজমের মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, গোলা গোকর্ণনাথ ধাম এবং কবিরধামের মতো ধর্মীয় স্থানগুলির পুনরুজ্জীবনে ভক্তি ও পর্যটন উভয়েই নতুন দিশা পেয়েছে।

গোসেবা এবং নেশামুক্তিই আসল রাষ্ট্রসেবা

রাসায়নিক চাষ থেকে সরে এসে প্রাকৃতিক চাষাবাদের ওপর জোর দিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, একটি গরু প্রায় ৩০ একর জমির জন্য জৈব সার দিতে পারে। সরকার প্রতি মাসে প্রতিটি গরুর জন্য ১৫০০ টাকা দিচ্ছে। তিনি যুব সমাজকে নেশা থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানান এবং বলেন, “নশা আমাদের নতুন প্রজন্মকে দুর্বল করার এক বিদেশি ষড়যন্ত্র।”

অনুষ্ঠানের শেষে মুখ্যমন্ত্রী छठ মহাপূজার শুভেচ্ছা জানান এবং সদগুরু কবীর পূজ্য শ্রী অসংদেব জি ধর্মশালার ভূমি পূজা করেন। তিনি আশ্রমের বার্ষিক ঐতিহ্য মেনে শ্রী ক্ষমা দেবজি এবং শ্রী গুরুমন সাহেবের নতুন মূর্তিরও আবরণ উন্মোচন করেন এবং একটি রুদ্রাক্ষের চারা রোপণ করেন। বহু সংখ্যক সাধু, ভক্ত ও জনপ্রতিনিধি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *