S-400-এর পর এবার মহাকাশেও সুরক্ষা কবচ, কেন এই ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হলো ভারত? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

শুধু স্থলভাগ নয়, এবার মহাকাশকেও সুরক্ষিত রাখতে এক বিশাল পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ভারত সরকার। শত্রুপক্ষের সম্ভাব্য হামলা থেকে দেশের উপগ্রহগুলিকে রক্ষা করতে তৈরি করা হবে এক নতুন ধরনের ‘বডিগার্ড স্যাটেলাইট’। এই মহাকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য প্রায় ২৭,০০০ কোটি টাকা খরচ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঠিক যেমনভাবে ভূমি থেকে S-400 ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাজ করে, তেমনই এই উপগ্রহগুলি মহাকাশে দেশের চোখ-কানকে সুরক্ষিত রাখবে।

মহাকাশে নজরদারির এক নতুন যুগ

এই পরিকল্পনার অধীনে ২০২৬ সালের মধ্যে প্রথম নজরদারি উপগ্রহটি মহাকাশে পাঠানো হতে পারে। মোট ৫০টি এমন উপগ্রহ উৎক্ষেপণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে, যা মহাকাশ থেকে ভারতের নজরদারি ক্ষমতাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে। কিন্তু কেন হঠাৎ করে এমন জরুরি পদক্ষেপ নিতে হলো?

কেন জরুরি এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা?

বর্তমানে যেখানে ভারতের মাত্র ১০০টির বেশি কার্যকর উপগ্রহ রয়েছে, সেখানে প্রতিবেশী দেশ চিনের রয়েছে প্রায় ৯৩০টি এবং পাকিস্তানের ৮টি উপগ্রহ রয়েছে। ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকে চিন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। এমনকি, গত ২৫ সালের মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের সংঘাতের সময় চিন পাকিস্তানকে তাদের স্যাটেলাইট কভারেজ দিয়ে সাহায্য করেছিল বলে জানা যায়। এই কারণেই ভারত তার মহাকাশ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দ্রুত শক্তিশালী করতে চাইছে।

নতুন প্রযুক্তি ও স্টার্টআপের বড় ভূমিকা

এই নতুন প্রযুক্তির উন্নয়নে সরকারি সংস্থাগুলি স্টার্টআপ কো ম্পা নিগুলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে। ভবিষ্যতে LiDAR প্রযুক্তির সাহায্যে এমন উপগ্রহ তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা শত্রুর হুমকি আগে থেকেই শনাক্ত করতে পারবে। এর পাশাপাশি, মহাকাশে ২৪x৭ নজরদারির জন্য স্থল-ভিত্তিক রাডার এবং শক্তিশালী টেলিস্কোপ সিস্টেমও তৈরি করা হবে।

২০২৫ সালের মে মাসে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালীন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO) মহাকাশ নিরাপত্তার গুরুত্ব প্রমাণ করে। ইসরোর চেয়ারম্যান ভি. নারায়ণন জানান, সেই সময় ৪০০-এর বেশি বিজ্ঞানী দিনরাত কাজ করে সামরিক বাহিনীকে উপগ্রহের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করেছিলেন। এই ঘটনা থেকেই স্পষ্ট যে, আগামী দিনে মহাকাশই হবে নতুন যুদ্ধক্ষেত্র। আর সেই যুদ্ধের জন্য এখন থেকেই নিজেদের প্রস্তুত করছে ভারত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *