হোটেলে ঠাঁই নেই, ‘পুজো ট্যুরিজমে’ মাতোয়ারা কল্যাণী, রাজস্থান-বিহার থেকেও আসছে দর্শনার্থী! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

দুর্গাপুজো এখন আর শুধু চারদিনের উৎসব নয়, তার ব্যাপ্তি বেড়ে ছয়-সাত দিনে দাঁড়িয়েছে। আর এই বর্ধিত উৎসবের জেরে নতুন করে প্রাণ ফিরেছে পর্যটন ব্যবসায়। কলকাতার পাশাপাশি এই পুজোর রমরমা শুরু হয়েছে শহরতলির সাজানো শহর কল্যাণীতেও। শুধু এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা নয়, ভিন্ন রাজ্য থেকেও মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন কল্যাণীর প্যান্ডেলগুলিতে। দর্শনার্থীদের ভিড়ে শহরের হোটেল ও গেস্ট হাউসগুলিতে এখন তিল ধারণের জায়গা নেই।

বিভিন্ন হোটেল ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, বিহার এমনকি ঝাড়খণ্ড থেকেও দর্শনার্থীরা আসছেন। তাঁদের কেউ কেউ পুজোর আগেই ফোনে বুকিং সেরে ফেলেছেন। কল্যাণী পুরসভার কাউন্সিলর এবং হোটেল ব্যবসায়ী দেবাশিস হালদার বলেন, “আমাদের এখানে এইমস হওয়ার পর হোটেলের সংখ্যা বেড়েছে। আর গত কয়েক বছরে পুজো নিয়েও উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। আমার হোটেলেই রাজস্থান থেকে তিনজন আসছেন, তাঁরা আগেই বুকিং করে রেখেছেন।”

পূজা উদ্যোক্তাদের মতে, পঞ্চমী-ষষ্ঠী থেকেই ভিনরাজ্যের দর্শনার্থীদের আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। লুমিনাস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক অমিত বিশ্বাস জানান, “কলকাতা থেকে তো আসছেনই, এছাড়াও পুজোর সময় ঝাড়খণ্ড, বিহার, বেনারস, দিল্লি থেকেও অনেক দর্শনার্থী আসেন। এমনকি বাংলাদেশ এবং ব্যাংকক থেকেও অনেকে এসেছেন আমাদের পুজো দেখতে।”

কল্যাণী আইটিআই মোড় থেকে সেন্ট্রাল পার্কের দিকে গেলেই সারি সারি হোটেল ও গেস্ট হাউস দেখা যায়। সেখানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসি ঘরের ভাড়া শুরু হয় প্রায় ১২০০ টাকা থেকে। ভিনরাজ্যের দর্শনার্থীরা আগেই বুকিং করে রাখেন, তবে জেলার মানুষেরা অনেক সময় রাতে ফিরতে না পেরে সরাসরি গেস্ট হাউসে চলে আসেন। এক গেস্ট হাউসের কর্মী বলেন, “আমার এখানে তো দুজন পুরোহিতও চলে এসেছেন, তাঁরা কোনও প্যান্ডেলে পুজো করবেন। মালদা-মুর্শিদাবাদের মতো জেলা থেকেও অনেকে আসেন, তাঁরা রাতে থেকে পরদিন বাড়ি ফেরেন।”

সাম্প্রতিক সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা প্রায়ই শোনা যায়। তবে এইবার কল্যাণীতে দুর্গাপুজোর হাত ধরে এক নতুন ধরনের ‘পরিযায়ী দর্শনার্থীর’ দেখা মিলেছে, যা প্রমাণ করছে উৎসবের কোনো সীমানা হয় না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *