কলকাতায় ফের চমক! দেশপ্রিয় পার্কের এই মণ্ডপ দেখে মাথা ঘুরে যাবে আপনারও – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

মহালয়ার ভোরে মহিষাসুরমর্দিনীর সুর কানে এলেই বাঙালির মন পুজো পুজো করে। কিন্তু এই বছর দেবীপক্ষের শুরুতেই ছবিটা একটু অন্যরকম। নীল আকাশে সাদা মেঘের বদলে ভেসে বেড়াচ্ছে কালো মেঘের ভেলা। তবুও পুজোপ্রেমী বাঙালির উন্মাদনা তুঙ্গে। সপ্তাহের শুরুতেই সেই ছবি দেখা গেল কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে। অনেকে নানা ছুতোয় অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়েছিলেন শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা আর ঠাকুর দেখার জন্য। এই ছবিই প্রমাণ করে দিচ্ছে, আগামী কয়েকদিন প্রবল জনস্রোত নামতে চলেছে শহরের রাজপথে।

দুর্গাপূজা এখন আর শুধু একটি উৎসব নয়, এটি এক শিল্পোৎসবও বটে। আর শিল্পকলার সেরা নিদর্শন দেখতেই মরিয়া প্রত্যেকে। কলকাতার দুর্গাপুজোর কথা উঠলে দেশপ্রিয় পার্কের কথা আসবেই। ২০১৫ সালে তাদের ‘বিশ্বের সবথেকে বড় দুর্গা’র ব্যানার সাড়া ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশে। দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ১০ বছর। কিন্তু চমক দেওয়াতে এখনও ক্লান্তি নেই তাদের। এবার দর্শনার্থীদের ভিড় টানতে তৈরি হয়েছে ১৭০ ফুট লম্বা ও ৬৫ ফুট উচ্চতার এক বিশাল নৌকা। ব্যানারেও পুরনো সেই কৌতূহলের ছোঁয়া, ‘দশ বছর পর আবার পুজোর ডেস্টিনেশন।’ তবে এবার উদ্যোক্তারা অনেক বেশি সতর্ক। মাঠের বাইরে থেকেই এই বিশাল নৌকা দর্শনার্থীরা দেখতে পাবেন। কান পাতলে শোনা যাবে জলের কলকল শব্দ, যা পুজোর আবহকে আরও বেশি জীবন্ত করে তুলবে।

থাইল্যান্ডের এক ঐতিহ্যবাহী বাজরার আদলে তৈরি হয়েছে এই মণ্ডপ। ব্রোঞ্জের রঙে সাজানো এই মণ্ডপ দেখে মনে হবে যেন চলছে নিজস্ব ছন্দে। মণ্ডপের সঙ্গে থাকছে আলোর রোশনাই। এই বিশাল নৌকামণ্ডপের পাশাপাশি দর্শকদের জন্য থাকছে পুজোর আবেগ নিয়ে তৈরি একটি তথ্যচিত্র। এবারের থিম শিল্পী রাজু দে এবং বিখ্যাত মৃৎশিল্পী পরিমল পালের হাতে গড়া সাবেকি প্রতিমাও এক অন্যতম আকর্ষণ। প্রায় ৬০ জন কারিগর গত তিন মাস ধরে এই মণ্ডপ তৈরি করেছেন। ভেতরে ঢুকলে অবাক হয়ে যাবেন সবাই। রাজবাড়ির আদলে তৈরি অন্দরমহলে ঝলমল করছে ঝাড়বাতি এবং দেওয়ালে রয়েছে রঙিন কারুকার্য।

পুজো কমিটির প্রধান কর্মকর্তা সুদীপ্ত কুমার বলেন, “দেশপ্রিয় পার্ক এবার নতুনের সন্ধানী। আমাদের এই মণ্ডপ পুজোর ইতিহাসে এক নতুন বিপ্লব আনবে। দর্শনার্থীরা একবার এলে বুঝতে পারবেন কেন দেশপ্রিয় পার্ক সেরা। বড় চমক আর আমরা যেন সমার্থক।”

কিন্তু পুজোয় নৌকার থিম কেন? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, নদ-নদী পুষ্ট বাংলার কথা মাথায় রেখেই শিল্পীরা এই ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন। তাঁদের মতে, প্রতি বছরই প্রাকৃতিক দুর্যোগে বন্যা হয়, তখন একমাত্র বাঁচার অবলম্বন হয়ে ওঠে নৌকা। সেই ভাবনাকেই পুজোর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই বছর।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *