কেন ঘোষণা সত্ত্বেও মিলল না নয়া জিএসটির সুবিধা? কোথায় আটকে গেল কেন্দ্রের ‘উপহার’? – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
কেন্দ্রের ঘোষণা ও ব্যাপক প্রচার সত্ত্বেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে নতুন জিএসটি হারের সুবিধা অধরা থাকল সাধারণ মানুষের কাছে। গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশজুড়ে জিএসটির হার কমার কথা থাকলেও, সোমবার বাজার ঘুরে দেখা গেল, খুচরো ক্রেতারা এই সুবিধা থেকে প্রায় বঞ্চিতই থেকেছেন। তবে স্বস্তি মিলেছে পাইকারি কেনাকাটায়। কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হলো?
মূলত পুরনো স্টক শেষ না হওয়াতেই জিএসটির নতুন হার কার্যকর করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন খুচরো বিক্রেতারা। শিয়ালদহের এক বিক্রেতা বলেন, “পুরনো স্টক আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। দশ বা বিশ টাকার পণ্যে কেউ বিলও চান না।” তাঁর মতে, নতুন দামের ট্যাগযুক্ত প্যাকেট আসতে আরও অন্তত ১৫-২০ দিন সময় লাগবে। বেহালার এক মুদি দোকানের মালিকের বক্তব্য আরও স্পষ্ট, “নিজের লোকসান করে তো আর ব্যবসা করব না। পুরনো স্টক শেষ হলেই নতুন জিএসটি হারে মাল কিনব।” অন্যদিকে, পাইকারি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, তারা ১২ শতাংশ জিএসটি মিটিয়ে কেনা পণ্যও ৫ শতাংশ জিএসটি চাপিয়ে বিক্রি করছেন। নতুন ব্যবস্থায় সেই ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে বলে তাঁদের দাবি।
তবে শুধু পুরনো স্টকই নয়, প্রযুক্তিগত সমস্যাও বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিনার পার্কের একটি নামী পোশাকের দোকানে পেমেন্ট করতে গিয়ে আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে এক ক্রেতাকে, কারণ নতুন জিএসটি হার চালু হওয়ার জন্য ‘সিস্টেম আপডেট’ হচ্ছিল না। একই সমস্যা দেখা গেছে একাধিক শপিং মল এবং ডিপার্টমেন্টাল স্টোরেও। সকাল থেকে বিল মেটাতে গিয়ে গ্রাহকদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে।
ওষুধের দোকানেও একই চিত্র। যে ক্রেতারা জিএসটি কমার খবর জানেন, তারা নতুন হারে বিল চাইছেন। কিন্তু যারা এই বিষয়ে ওয়াকিবহাল নন, পুরনো স্টকের ওষুধ তাদের কাছে আগের দামেই বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে এক শ্রেণির ক্রেতা ঠকছেন।
তবে ব্যতিক্রমও কিছু আছে। গড়িয়ার একটি কেকের দোকানের মালিক জানিয়েছেন, তাদের পেস্ট্রির দাম ইতিমধ্যেই কমেছে। কিন্তু অনেক বিক্রেতাই পুজোর জন্য আগেভাগে প্রচুর পরিমাণে মাল কিনেছেন, যা নতুন হারে লোকসানে বিক্রি করা সম্ভব নয় বলেই তাঁদের দাবি। ফলে প্রশ্ন উঠছে, দিনক্ষণ ঘোষণা করে জিএসটি কমানোর এই উদ্যোগ কেন সাধারণ ক্রেতার কাছে পৌঁছতে পারল না?