ট্রাম্পের এক চালে কপাল খুলছে ভারতের, বড় ক্ষতির মুখে আমেরিকা – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ‘গোল্ড কার্ড’ নীতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলছে জোর আলোচনা। আমেরিকায় কাজ করতে ইচ্ছুক ভারতীয় পেশাদারদের জন্য এই নীতি তৈরি করেছে এক বড়সড় সমস্যা। এইচ-১বি ভিসা পাওয়ার খরচ এখন আকাশছোঁয়া, যা অনেক ভারতীয়র ‘আমেরিকান ড্রিম’ ভেঙে দিতে পারে।

কেন এই সিদ্ধান্ত?

ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এইচ-১বি ভিসার অপব্যবহার হচ্ছে এবং এটি আমেরিকার স্থানীয় চাকরির জন্য হুমকি। এই যুক্তিতেই নিয়মকানুন এবং কোটা কঠোর করা হচ্ছে। নতুন ‘গোল্ড কার্ড’ স্কিমের আওতায় এইচ-১বি ভিসার ফি ১ লাখ ডলার বা প্রায় ৮৮ লাখ টাকা করা হয়েছে। এর ফলে শুধুমাত্র বিশ্বের সেরা দক্ষ পেশাদাররাই আমেরিকায় যেতে পারবেন।

হোয়াইট হাউসের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০০৩ সালে যেখানে এইচ-১বি পেশাদারদের হাতে ৩২% আইটি চাকরি ছিল, ২০২৫ সালের মধ্যে তা ৬৫% ছাড়িয়ে যাবে।

আমেরিকার বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লটনিক বলেছেন, “এক ব্যক্তি কি এতই মূল্যবান যে তার জন্য কো ম্পা নি সরকারকে প্রতি বছর ১ লাখ ডলার দেবে? অভিবাসনের উদ্দেশ্য তো এটাই। আমেরিকানদের কাজে লাগান এবং নিশ্চিত করুন যে যারা আমেরিকায় আসছেন, তারা দুর্দান্ত প্রতিভাবান।”

ভারত কি চ্যালেঞ্জের মুখে?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ভারতের জন্য একই সঙ্গে চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ। এই নীতির ফলে বহু ভারতীয় পেশাদার দেশে ফিরতে পারেন। এতে ভারতের টেক সেক্টর আরও শক্তিশালী হতে পারে। অনেক ভারতীয় আইটি সংস্থা ইতোমধ্যে এইচ-১বি ভিসার ওপর তাদের নির্ভরতা ৫০% এরও কমিয়ে দিয়েছে।

AionOS-এর প্রতিষ্ঠাতা সিপি গুরনানি বলেন, “ভিসা ফি পরিবর্তনের ফলে আমাদের ব্যবসায় খুব কমই প্রভাব পড়বে। কারণ আমরা ইতিমধ্যেই এই পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছি।”

ভবিষ্যৎ কেমন হবে?

শিল্প বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন ভিসা ফি বিশ্বজুড়ে আইটি প্রতিভার ছবিটা সম্পূর্ণ বদলে দেবে। হার্ভার্ড ল স্কুল ও কার্নেগি মেলনের প্রাক্তন বিশিষ্ট ফেলো বিবেক ওয়াধওয়া বলেন, “১ লাখ ডলারের এইচ-১বি ফি আমেরিকার জন্য অর্থনৈতিক আত্মহত্যা। এর ফলে প্রতিভাবান ভারতীয়রা তাদের দক্ষতা, সঞ্চয় এবং বিশ্বব্যাপী অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হবেন। এই বিপরীতমুখী প্রতিভার স্রোত থেকে ভারত দারুণভাবে লাভবান হবে।”

আমেরিকার এই নীতি ভারত সরকার এবং কো ম্পা নিগুলোকে নিজেদের দেশে সুযোগ বাড়াতে উৎসাহিত করবে। জিটিটি ডেটা সলিউশনস লিমিটেডের চেয়ারম্যান গণেশ নটরাজনের মতে, এই নিয়ম চালু থাকলে ‘আমেরিকান ড্রিম’ এখন আর সবার জন্য সম্ভব হবে না। তবে দীর্ঘমেয়াদে ভারত এর থেকে লাভবান হবে, যদিও এতে কিছুটা সময় লাগবে। এই মুহূর্তে ভারত নিজেদেরকে গ্লোবাল টেক হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার দারুণ সুযোগ পাচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *