চীনের মাথা ব্যথার কারণ ভারত, আমেরিকাও কি চিন্তিত? – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
একসময় ভারত ছিল সাধারণ এক দেশ, কিন্তু এখন বৈশ্বিক মঞ্চে তার শক্তিশালী উপস্থিতি বিশ্বের পরাশক্তিদের ভাবাচ্ছে। ভারতের দ্রুত অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, সামরিক আধুনিকীকরণ এবং কূটনৈতিক স্বায়ত্তশাসন শুধু প্রতিবেশী চীনকেই নয়, আমেরিকাকেও সতর্ক করে তুলেছে।
ভারতের অর্থনৈতিক উত্থান: এশিয়ার নতুন শক্তি
বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি এখন ভারত। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি ছিল ৬.৫%, এবং ২০২৪-২৫ সালের জন্য তা ৬.২% অনুমান করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত ৭ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হতে পারে। এই অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে তরুণ জনসংখ্যা, ডিজিটাল বিপ্লব, ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে বিনিয়োগ এবং এফডিআই প্রবাহের কারণে। এখন বহু বৈশ্বিক সংস্থা চীনের বদলে ভারতকে তাদের সাপ্লাই চেইনের কেন্দ্রবিন্দু বানাচ্ছে। এটি চীনের জন্য এক বড় চিন্তার বিষয়, কারণ তাদের জিডিপি বৃদ্ধির হারও কমে যাচ্ছে।
আমেরিকার দুশ্চিন্তা: চীনকে প্রতিহত করতে ভারত কতটা শক্তিশালী?
আমেরিকার কাছে ভারত চীনের বিরুদ্ধে একটি কৌশলগত অংশীদার, কিন্তু ভারতের দ্রুত অগ্রগতি হোয়াইট হাউসের জন্য এক ধরনের চ্যালেঞ্জও বটে। আমেরিকা চায় ভারত চীনকে ভারসাম্য রক্ষা করুক, কিন্তু রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার মতো ভারতের স্বাধীন কূটনৈতিক পদক্ষেপগুলো আমেরিকার প্রত্যাশাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
আমেরিকা ভয় পাচ্ছে যে ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রভাব তাদের বৈশ্বিক আধিপত্যকে দুর্বল করতে পারে, বিশেষত ডিজিটাল শাসন, জলবায়ু আলোচনা এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, যদি ভারতের উত্থান সঠিকভাবে মোকাবিলা করা না হয়, তাহলে এটি আমেরিকার জন্য ‘প্রজন্মগত কৌশলগত ব্যর্থতা’ হতে পারে। এইচ-১বি ভিসা এবং অভিবাসন বিষয়ক সমস্যাগুলোও দু’দেশের সম্পর্কে তিক্ততা বাড়াচ্ছে।
চীনের নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী: ভারত
চীনের জন্য ভারত শুধু একটি অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, সুরক্ষার দিক থেকেও বড় হুমকি। সীমান্ত বিরোধ, পাকিস্তানের প্রতি চীনের সমর্থন এবং মে ২০২৫-এ ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে বেইজিংয়ের ভূমিকা আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে। অর্থনৈতিক দিক থেকে, ভারত চীনের আঞ্চলিক আধিপত্যের আকাঙ্ক্ষাকে ধাক্কা দিচ্ছে। যেখানে চীন একটি আঞ্চলিক আধিপত্য চায়, সেখানে ভারত একটি সুষম বহুপাক্ষিক বিশ্ব ব্যবস্থার পক্ষ নেয়। অনেক রিপোর্ট অনুযায়ী, চীন ভারতকে তাদের ‘সবচেয়ে বড় ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দ্বী’ মনে করে। যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাম্প্রতিক চীন সফরে সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি হয়েছে, তবে উভয় দেশের মধ্যে কাঠামোগত দ্বন্দ্ব এখনও রয়ে গেছে।