আমরা স্কুল প্রিন্সিপাল নই, তবু… হাইকোর্টের বিচারপতিদের ওপর কেন ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা ও সময়মতো রায় না দেওয়ার কারণে এবার সরাসরি হাইকোর্টের বিচারপতিদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করল দেশের শীর্ষ আদালত। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, যেখানে কিছু বিচারপতি দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করে মামলার নিষ্পত্তি করছেন, সেখানে অনেকেই সময়মতো কাজ শেষ করতে পারছেন না।

বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি এন কোটেশ্বর সিংয়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সুপ্রিম কোর্ট কোনো স্কুল প্রিন্সিপালের মতো কাজ করতে চায় না। কিন্তু মামলার জট কমাতে হলে বিচারপতিদের কাজের মূল্যায়ন জরুরি।

আদালত এই মন্তব্যটি করে কিছু ফৌজদারি মামলার আপিলের শুনানির সময়। যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন দোষী আবেদন করে জানায়, ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট তাদের আপিলের রায় বছরের পর বছর ধরে আটকে রেখেছে। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি সূর্যকান্ত মন্তব্য করেন, কিছু বিচারপতির মধ্যে অপ্রয়োজনীয়ভাবে মামলা স্থগিত করার প্রবণতা আছে, যা তাঁদের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অতীতে এমন ঘটনা ঘটেছেও।

বিচারপতি সূর্যকান্ত আরও বলেন, প্রত্যেক বিচারপতির নিজস্ব কর্মদক্ষতা মূল্যায়নের একটি মাপকাঠি থাকা উচিত। তাঁদের এমন একটি স্ব-ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা থাকা দরকার, যাতে ডেস্কের ওপর ফাইলের স্তূপ না জমে। তিনি বলেন, ‘কিছু বিচারপতি দিন-রাত পরিশ্রম করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, কিছু বিচারপতি আছেন যারা কাজ শেষ করতে পারেন না, কারণ ভালো হোক বা মন্দ।’

সুপ্রিম কোর্ট জানায়, যদি কোনো বিচারপতি একটি ফৌজদারি আপিলের শুনানি করেন, তবে একদিনে ৫০টি মামলার রায় দেওয়া আশা করা যায় না। একদিনে একটি আপিলের রায় দেওয়াও অনেক বড় ব্যাপার। কিন্তু জামিনের মামলার ক্ষেত্রে যদি কোনো বিচারপতি বলেন যে তিনি একদিনে কেবল একটি জামিনের মামলার রায় দেবেন, তাহলে তাঁর আত্ম-পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।

শীর্ষ আদালত আরও বলে, ‘আমাদের উদ্দেশ্য কোনো স্কুল প্রিন্সিপালের মতো কাজ করা নয়। তবে কিছু নির্দেশিকা থাকা দরকার, যাতে বিচারপতিরা তাঁদের সামনে থাকা কাজের পরিমাণ এবং তা শেষ করার সময়সীমা সম্পর্কে অবগত থাকেন। বিচার বিভাগের কাছে মানুষের একটি ন্যায্য প্রত্যাশা থাকে।’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *