শহরের জল নামছে না কেন? কলকাতা কি আবারও ডুবল সেই ‘৭৮-এর মতো? – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

রবিবার মধ্যরাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত টানা পাঁচ ঘণ্টার প্রবল বর্ষণে কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে কলকাতা। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ, মধ্য কলকাতা থেকে সল্টলেক, নিউটাউন—সর্বত্রই ছবিটা এক। কোথাও হাঁটু পেরোনো, কোথাও বা কোমর সমান জল। গাড়ি অর্ধেক ডুবে আছে, আর নিচু এলাকার বাড়িগুলোর একতলায় জল থইথই করছে। রাস্তায় যানবাহন প্রায় নেই বললেই চলে।

রেল ও মেট্রো লাইনে জল ঢুকে পরিষেবা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর খবর সামনে আসছে। এই পরিস্থিতি দেখে বহু মানুষ ১৯৭৮ সালের ভয়াবহ বন্যার কথা স্মরণ করছেন। খোদ কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও এই অবস্থার সঙ্গে ১৯৭৮ সালের বন্যার তুলনা টেনেছেন।

শহরের এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে কলকাতা পুরসভার কন্ট্রোল রুমে সকাল থেকেই নজরদারি চালাচ্ছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও মেয়র পারিষদ তারক সিং। পুরসভা সূত্রে খবর, জমে থাকা জল নামিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। অন্যদিকে, গঙ্গার আসন্ন বান নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ছে। বিপুল বৃষ্টির পর লকগেট খুলে দেওয়া হলেও তা উল্টো ফল দিয়েছে, কারণ গঙ্গার জল উলটে শহরে ঢুকে পড়ছে। দুপুরে গঙ্গায় বান আসার সম্ভাবনা থাকায় এই বিপদ আরও বাড়তে পারে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার একের পর এক ঘটনার পর মেয়র জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

জলমগ্ন পরিস্থিতি নিয়ে মেয়র বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকে এমনটা দেখিনি। আমাদের পাড়ায় জল জমে গিয়েছে, আদি গঙ্গা ভর্তি, জল নিতে পারছে না। ১৯৭৮ সালের বন্যা দেখেছি, কিন্তু এই দৃশ্য দেখিনি।” তিনি আরও জানান, নিচু এলাকার মানুষের জন্য স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে এবং পুরসভা ও থানার পক্ষ থেকে খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। যদি আর বৃষ্টি না হয়, তাহলে আশা করা যায় রাতের মধ্যে জল নেমে যাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *