শহরের রাস্তা সবচেয়ে নিরাপদ, কলকাতা নাকি দেশের বাকি শহর? কী বলছে পরিসংখ্যান, চমকে উঠবেন আপনি! – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম পথ দুর্ঘটনা ঘটে কলকাতায়। কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ভারতের অন্য বড় শহরগুলোর তুলনায় কলকাতা শহরের পথ দুর্ঘটনা, আহত এবং মৃতের সংখ্যা অনেকটাই কম।
লালবাজারের একজন ট্রাফিক কর্তা জানান, রাজ্য সরকারের ‘সেফ ড্রাইভ সেফ লাইফ’ প্রকল্পের কারণে পথ নিরাপত্তা নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। এর ফলে কলকাতা-সহ রাজ্যের সর্বত্র পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেকটাই কমে এসেছে।
দেশের বড় শহরগুলোর মধ্যে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পরিসংখ্যান চমকে দেওয়ার মতো। গত বছর কলকাতায় যেখানে ১৮৮টি পথ দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১৯১ জন, সেখানে দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা ১৫৫১। সেখানে ১৫৯৯টি পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে। বেঙ্গালুরুতেও ৮৬৯টি পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৮৯৪ জনের। এছাড়া চেন্নাই, মুম্বই ও হায়দরাবাদের পরিসংখ্যানও বেশ আশঙ্কাজনক। গত বছর চেন্নাইয়ে ৫৩৪টি দুর্ঘটনায় ৫৪৪ জন, মুম্বইয়ে ৩৮৪টি দুর্ঘটনায় ৩৭০ জন এবং হায়দরাবাদে ২৮৬টি পথ দুর্ঘটনায় ৩০১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শুধু মৃত্যু নয়, পথ দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যাতেও কলকাতা অনেকটাই এগিয়ে। গত বছর দিল্লিতে পথ দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যা ছিল ৫২২৪ জন, বেঙ্গালুরুতে এই সংখ্যাটা ৪০২২। মুম্বইয়ে ২৭২৩ জন এবং হায়দরাবাদে ৩৩৯৩ জন আহত হয়েছেন।
লালবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কলকাতায় পথ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা কমেছে। ২০১৯ সালে ২৬৭ জন মারা গেলেও ২০২৩ সালে সেই সংখ্যা কমে হয় ১৫৯। যদিও গত বছর দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় এলাকা কলকাতা পুলিশের আওতায় আসার পর নতুন ডিভিশন তৈরি হয়েছে। ফলে ওই এলাকার পরিসংখ্যানও যুক্ত হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯১ হয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালের তুলনায় গত বছর শহরে আহত ব্যক্তির সংখ্যাও কমেছে। ২০২৩ সালে আহত হয়েছিলেন ১৭৫৪ জন, গত বছর তা কমে হয়েছে ১৭২৪।
গত বছর দুর্ঘটনায় নিহত ১৯১ জনের মধ্যে পথচারীর সংখ্যাই বেশি। ৭৯ জন পথচারী পথ দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। বাইক ও স্কুটি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৭৫ জন। এর মধ্যে ৫৪ জন চালক এবং ২১ জন চালকের পেছনে বসা আরোহী। বর্ষাকালে রাস্তা পিছল হওয়ায় দুর্ঘটনা বেড়েছে। গত বছর জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে যথাক্রমে ২০, ১১ এবং ২১ জন মারা গেছেন। এছাড়া, দৃশ্যমানতার অভাবে জানুয়ারিতে ১৮ জন এবং ফেব্রুয়ারি, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে যথাক্রমে ১৩, ১৭ ও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।