দিনে ঠিক কতটা জল খাচ্ছেন? অতিরিক্ত জল পান করলেই কিন্তু এই বিপদ হতে পারে! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু শরীর সুস্থ রাখার জন্য সারাদিনে ঠিক কতটা জল পান করা উচিত, তা নিয়ে অনেকের মনেই নানা প্রশ্ন থাকে। বিশেষজ্ঞরা সবসময়ই ডিহাইড্রেশন এড়াতে বেশি করে জল পান করার পরামর্শ দেন। তবে অতিরিক্ত জল পান করলেই যে বিপদ হতে পারে, তা কি আপনি জানেন?

শরীরকে সচল রাখতে এবং প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিকঠাক কাজ করার জন্য জল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তেষ্টা মেটানো থেকে শুরু করে শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখা, সবেতেই জলের গুরুত্ব অপরিসীম। এমনকি, শীতকালে কম জল পান করার প্রবণতা থাকলেও, তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। ঠিক কতটা পরিমাণে এবং কখন জল পান করা জরুরি, তা জেনে রাখা প্রয়োজন।


কেন পুরুষ ও মহিলার জলের চাহিদা ভিন্ন?

বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের প্রতিদিন ৩.৭ লিটার তরল প্রয়োজন হয়, যেখানে একজন মহিলার প্রয়োজন হয় ২.৭ লিটার। তবে এই তরল মানে শুধু জল নয়, চা, কফি, দুধ এবং অন্যান্য হেলথ ড্রিঙ্কও এর অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ, সারাদিনে যদি আপনি বেশি চা-কফি পান করেন, তবে সেই অনুপাতে জলের পরিমাণ মেপে পান করা উচিত।

একজন সুস্থ মানুষের গরমে ৮ থেকে ১০ গ্লাস জল পান করা দরকার। তবে গর্ভবতী বা মাতৃদুগ্ধ পান করানো মহিলাদের জন্য এর পরিমাণ বেড়ে ১০ থেকে ১২ গ্লাস হওয়া উচিত। কারণ, এ সময় পর্যাপ্ত জল পান না করলে মা ও শিশু উভয়েরই স্বাস্থ্যের ঝুঁকি হতে পারে। যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তাদেরও জলের চাহিদা বেশি থাকে।


আপনার ওজন অনুযায়ী জলের পরিমাণ কীভাবে হিসাব করবেন?

শরীরের ওজনের ওপর ভিত্তি করেও জলের পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়। যার ওজন ৫০ কিলোগ্রাম, তার যতটা জল প্রয়োজন, ৯০ কিলোগ্রাম ওজন হলে সেই পরিমাণ বদলে যাবে। একটি সহজ হিসাব হলো, আপনার শরীরের ওজনকে ২ দিয়ে ভাগ করলে যে সংখ্যাটি পাওয়া যাবে, সেই পরিমাণ জল পান করা দরকার। তবে এই হিসাবটি শুধুমাত্র একটি সাধারণ নির্দেশিকা, কারণ একজন মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং শারীরিক কার্যকলাপের ওপরও জলের চাহিদা নির্ভর করে।


অতিরিক্ত জল পান করলে কী বিপদ হতে পারে?

প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জল পান করলে কিডনিকে অতিরিক্ত চাপ নিয়ে কাজ করতে হয়। এর ফলে শরীর থেকে সোডিয়াম অস্বাভাবিকভাবে বেরিয়ে যেতে পারে, যা হাইপোনাট্রেমিয়া নামে একটি গুরুতর সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এর লক্ষণগুলো হলো: মাথা ঘোরা, বমিভাব, মনোযোগের অভাব, এবং অতিরিক্ত ক্লান্তি। পরিস্থিতি গুরুতর হলে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বা হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে।

শরীরের জলের ভারসাম্য ঠিক আছে কি না, তা বোঝার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো প্রস্রাবের রং পরীক্ষা করা। সাধারণত হালকা হলুদ বা বর্ণহীন প্রস্রাব নির্দেশ করে যে আপনার শরীরে পর্যাপ্ত জল আছে। মনে রাখবেন, শরীরকে সুস্থ রাখতে জল যতটা গুরুত্বপূর্ণ, অতিরিক্ত জলও ততটাই ক্ষতিকর। আপনার যদি কোনো বিশেষ শারীরিক সমস্যা থাকে, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জল পান করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *