ঐতিহ্যের ৫শ বছর, রহস্যে ঘেরা কোচবিহারের বড়দেবীকে ঘিরে আজও চলছে এক গোপন প্রথা! – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

কোচবিহারে শুরু হয়ে গেল মহারাজার প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী বড়দেবীর পুজো। প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো এই পুজো শুধু কোচবিহার নয়, গোটা উত্তরবঙ্গ ও নিম্ন আসামের মানুষের কাছে এক আবেগ। প্রতি বছর এই পুজোকে কেন্দ্র করে এক বিশেষ প্রথার সাক্ষী থাকেন ভক্তরা। মঙ্গলবার পূর্ণসাজে সেজে উঠলেন দেবী। এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় দেবীবাড়িতে দেবী দর্শন করবেন জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা।

দেবীর গয়না ও সাজসজ্জা

দেবীকে পূর্ণসাজে সজ্জিত করতে প্রায় ৬০ ভরি সোনা ও রূপার গয়না ব্যবহার করা হচ্ছে। কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরের স্ট্রংরুম থেকে কড়া পুলিশি পাহারায় আনা হয়েছে এই সমস্ত অলঙ্কার। এর মধ্যে রয়েছে সোনার ওরচাঁদ, কাঠি মালা ও চাপকলি হার। এদিন থেকে দেবীবাড়িতে পুলিশ মোতায়েন থাকবে এবং সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে। বর্তমানে দেবীর মূর্তি রং করার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। প্রতিমা শিল্পী প্রভাত চিত্রকর সহ তার সহযোগীরা এই কাজটি সম্পন্ন করেছেন।

রহস্যে ঘেরা প্রথা

বড়দেবীর পুজো অন্যান্য দুর্গাপুজোর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এখানকার দেবী রক্তবর্ণা এবং তার পাশে লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিকের বদলে রয়েছেন জয়া ও বিজয়া। দশভুজা দেবী অসুর বধ করছেন। এই পুজোয় মহিষ, পাঁঠা ও পায়রা বলির রীতি রয়েছে। এই পুজোটি মূলত দু’মাসের পুজো। ময়না কাঠ সংগ্রহ, তার পুজো ও সেই কাঠ স্থাপন করে প্রতিমা তৈরি করা হয়। প্রচলিত আছে, একসময় এই পুজোয় নরবলি হতো। যদিও বর্তমানে সেই প্রথা বিলুপ্ত। তবে এখন একটি নির্দিষ্ট পরিবারের সদস্যরা অষ্টমীর রাতে এক গুপ্ত পুজোয় দেবীকে নিজেদের রক্ত উৎসর্গ করেন। এই প্রথাটি আজও কঠোর গোপনীয়তার সঙ্গে পালন করা হয়। এই বিশেষ সময় কেবল রক্ত প্রদানকারী সেখানে উপস্থিত থাকতে পারেন, অন্য কারো প্রবেশাধিকার থাকে না। এছাড়াও চালিয়াবালিয়া পুজো ও বিসর্জনের ক্ষেত্রেও রয়েছে ভিন্নতা, যা এই পুজোকে অনন্য করে তুলেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *