বিদেশী চাপের মুখেও অটল ভারত, জয়শঙ্করকে কেন ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বার্তা দিলেন মার্কিন বিদেশমন্ত্রী? – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যেই সামনে এল এক গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক বৈঠক। সম্প্রতি H-1B ভিসার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত উচ্চ শুল্ক এবং রাশিয়ার তেল আমদানির ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের কারণে দুই দেশের সম্পর্কে যে অস্বস্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তার মাঝেই অনুষ্ঠিত হলো এই বৈঠক।
সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই সাক্ষাৎ নিয়ে কূটনৈতিক মহলে কৌতূহল ছিল তুঙ্গে। কারণ, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক ভারতীয় আইটি সেক্টরের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন নতুন ভিসা ফি ঘোষণার ঠিক পরেই এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনার মূল বিষয়বস্তু:
বৈঠকের পর মার্কিন বিদেশমন্ত্রী রুবিও ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্বকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে বর্ণনা করেন এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দেন। প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, জ্বালানি, ওষুধ এবং খনিজ পদার্থের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে একসঙ্গে কাজ করার ওপর জোর দেন তিনি। একইসঙ্গে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মিলিত ভূমিকা এবং কোয়াড (Quad) অংশীদারিত্বের গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা হয়।
টুইট বার্তায় জয়শঙ্কর:
বৈঠকের পর বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ একটি পোস্টে এই বৈঠককে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেন। তিনি লেখেন, ‘আমাদের আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় স্থান পেয়েছে। অগ্রাধিকারমূলক ক্ষেত্রগুলিতে দ্রুত অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আমরা একমত হয়েছি এবং যোগাযোগ বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ভিসা ফি নিয়ে উদ্বেগ:
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন ভিসা ফি ঘোষণার পর ভারতীয় আইটি কো ম্পা নিগুলি গভীর উদ্বেগে রয়েছে। গত বছর মোট H-1B ভিসার ৭১% পেয়েছিল ভারত, যেখানে চীন পেয়েছিল মাত্র ১২%। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নতুন ফি কাঠামো ভারতীয় কো ম্পা নিগুলির খরচ অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে। এমন এক সময়ে এই সিদ্ধান্ত এল যখন দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে ইতোমধ্যেই উত্তেজনা ছিল। যদিও গত সেপ্টেম্বরে উভয় পক্ষ বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা পুনরায় শুরু করেছিল, তবে নতুন করে ভিসা ফি আরোপ পরিস্থিতিকে আবারও জটিল করে তুলেছে। এতসব টানাপোড়েনের মধ্যেও ওয়াশিংটন এবং নয়াদিল্লির মধ্যে কূটনৈতিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে, যা উভয় দেশের জন্যই ইতিবাচক।