ভয়ংকর বিপদ লুকিয়ে আছে পিত্তথলি অপারেশনের পর! ভুলেও এড়িয়ে যাবেন না এই লক্ষণগুলো – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
পিত্তথলি, যাকে গালব্লাডারও বলা হয়, আমাদের শরীরের একটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি লিভারের নিচে থাকে এবং লিভার থেকে উৎপন্ন হওয়া পিত্তরসকে জমা করে রাখে। এই পিত্তরস হজমে সাহায্য করে, বিশেষ করে চর্বি জাতীয় খাবার হজমের জন্য এটি খুবই জরুরি। কিন্তু অনেক সময় পিত্তথলিতে পাথর হলে বা তাতে সংক্রমণ হলে অসহ্য ব্যথা, বমি, জন্ডিস বা হজমের মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়। তখন অস্ত্রোপচার করে পিত্তথলি বাদ দিতে হয়। কিন্তু অস্ত্রোপচারের পর অনেকেই কিছু সাধারণ সমস্যার মুখোমুখি হন, যা সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি।
অপারেশনের পর কী ধরনের সমস্যা হতে পারে?
পিত্তথলি বাদ দেওয়ার পর বেশিরভাগ মানুষই স্বাভাবিক জীবন যাপন করেন। তবে কিছু সাধারণ সমস্যা দেখা দিতে পারে। দিল্লির এইমসের গ্যাস্ট্রোলজি বিভাগের প্রাক্তন চিকিৎসক ড. অনন্য গুপ্ত জানান, অপারেশনের পর অনেকেরই গ্যাস বা পেট ফাঁপার সমস্যা হয়। এ থেকে বাঁচতে হালকা ও সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়া উচিত। তৈলাক্ত বা মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা এবং বেশি করে জল ও তরল খাবার পান করা দরকার।
আবার কারো কারো বারবার ডায়রিয়ার সমস্যা হতে পারে। এমন হলে ফাইবারযুক্ত খাবার খেতে হবে এবং একবারে বেশি খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে বারে বারে খাওয়া উচিত।
খাওয়ার পর পেট ভারী লাগা বা হজমের সমস্যা হওয়াও সাধারণ ঘটনা। এটি এড়াতে খাবার ধীরে ধীরে ও ভালো করে চিবিয়ে খাওয়া উচিত। খাওয়ার পরেই শুয়ে পড়া থেকে বিরত থাকা দরকার। অনেক রোগীর বুকে জ্বালা বা অ্যাসিডিটির সমস্যাও হতে পারে। এর থেকে মুক্তি পেতে কফি, চা এবং বেশি তেল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে পারেন। এক্ষেত্রে লেবুর জল বা ঘোল পান করলে আরাম পাওয়া যেতে পারে।
ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস
পিত্তথলি বাদ দেওয়ার পর কিছু মানুষের ওজন হঠাৎ করে বেড়ে বা কমে যেতে পারে। এক্ষেত্রে সুষম খাদ্য এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অস্ত্রোপচারের পর শরীর সুস্থ হতে কিছুটা সময় নেয়, তাই এই সময়ে দুর্বলতা বা ক্লান্তি অনুভব করা স্বাভাবিক। ভিটামিন ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলে শরীর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। অনেক সময় অপারেশনের পরেও পেটে হালকা ব্যথা থাকতে পারে। যদি ব্যথা তীব্র বা ক্রমাগত হয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি।
সমস্যাগুলো থেকে কীভাবে বাঁচবেন?
ড. গুপ্তের মতে, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপন পদ্ধতি এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে এই সমস্যাগুলো সহজেই সামলানো যায়। নিয়মিত হালকা খাবার খাওয়া, ফাইবারযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন করলে ধীরে ধীরে হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয়ে আসে।