শরীর কি বলছে আপনার লিভার খারাপ হয়ে যাচ্ছে? এই ১০টি লক্ষণ দেখলে এখনই সতর্ক হন – এবেলা

এবেলা ডেস্কঃ

লিভার মানব শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বহু জরুরি কাজ সম্পন্ন করে। প্রায় ১.৫ থেকে ২ কেজি ওজনের এই অঙ্গটি খাদ্য হজম করা, শক্তি তৈরি ও সংরক্ষণ করা, প্রোটিন সংশ্লেষণ, ভিটামিন ও মিনারেল সঞ্চয় এবং রক্ত পরিশুদ্ধ করার মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু যখনই লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যায়, শরীর কিছু সংকেত দেয়।

আপনার লিভারের কার্যক্ষমতা কমছে, এমন কিছু লক্ষণ হলো—জন্ডিস, অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা, পেটে ফোলাভাব ও ব্যথা, ক্ষুধামন্দা, ঘন ঘন বমি হওয়া, প্রস্রাবের রং গাঢ় হওয়া, ত্বকে চুলকানি বা র‍্যাশ এবং রক্ত জমাট বাঁধতে সমস্যা হওয়া। যদিও লিভার খারাপ হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে, তবে সুস্থ জীবনযাপনের জন্য লিভারকে পরিষ্কার, সুস্থ ও শক্তিশালী রাখা জরুরি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু বিশেষ খাবার লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারে। আয়ুর্বেদ চিকিৎসক দীক্ষা ভাবসার তেমনই কিছু উপাদানের কথা জানিয়েছেন, যা লিভার পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।

যেসব খাবার লিভারকে সুস্থ রাখতে পারে

লেবু: আয়ুর্বেদ অনুযায়ী, লেবু শরীর পরিষ্কার করতে এবং পিত্ত বাড়াতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন সি লিভারকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সকালে উষ্ণ গরম জলে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
হলুদ ও গোলমরিচ: হলুদে থাকা কারকিউমিন নামক উপাদান প্রদাহ ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। এটি লিভারকে বিষাক্ত পদার্থ থেকে বাঁচায় এবং পিত্তের প্রবাহ উন্নত করে। অন্যদিকে, গোলমরিচ লিভার পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং হলুদের কার্যকারিতা বাড়ায়। আধ চামচ হলুদ ও এক চিমটে গোলমরিচ গরম জল, দুধ, মধু বা স্যুপের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
ধনে: ধনে শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ দূর করতে, হজমশক্তি উন্নত করতে এবং লিভারের কোষ রক্ষা করতে সাহায্য করে। ধনেপাতার চা বানিয়ে বা সবজি ও তরকারিতে ধনেপাতা ব্যবহার করে এর সুফল পাওয়া যায়।
আদা ও আমলকী: আদা হজমশক্তি দ্রুত করে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে। এটি ফ্যাটি লিভার রোগ প্রতিরোধেও সহায়ক। আদার চা, বা খাবারের পর সামান্য আদা মধুর সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে, ভিটামিন সি-এর চমৎকার উৎস হওয়ায় আমলকী লিভার পরিষ্কার করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে তরুণ রাখতে সাহায্য করে। আমলকী ফল, মোরব্বা বা গুঁড়ো হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।
বিট ও গাজর: বিটে থাকা বেটালেইনস এবং নাইট্রেটস প্রদাহ কমায় এবং লিভার পরিষ্কারে সাহায্য করে। এটি কাঁচা স্যালাড বা জুস হিসেবে খাওয়া ভালো। গাজরে থাকা বিটা-ক্যারোটিন এবং ফ্ল্যাভোনয়েডস লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করে।
গ্রিন টি: গ্রিন টি লিভারের স্বাস্থ্য ভালো করে এবং ফ্যাটি লিভার রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি সকালে খালি পেটে বা খাবারের এক ঘণ্টা পর পান করা যেতে পারে।
এই খাবারগুলো নিয়মিত গ্রহণ করলে লিভারের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং এর কার্যকারিতা বাড়ে। তবে যেকোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *