গঙ্গায় কেন বাড়ছে জল, এর সঙ্গে কলকাতার জল জমার সম্পর্ক কী? বিরোধীদের অভিযোগের মুখে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী – এবেলা
এবেলা ডেস্কঃ
সোমবারের গভীর রাতের বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল কলকাতা শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা। আর এই নিয়েই রাজ্য সরকারের নিকাশী ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধীরা। তবে এবার তাদের পাল্টা জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, লাগাতার গঙ্গায় ড্রেজিংয়ের কারণেই এত দ্রুত কলকাতার জল নেমে যাচ্ছে। এমনকী, তিনি এই ধরনের বৃষ্টিকে ‘মেঘভাঙা’ বলে উল্লেখ করেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই বিপুল পরিমাণ বৃষ্টির কোনও পূর্বাভাস ছিল না। এরপরেও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তিনি আরও বলেন, ফারাক্কায় ড্রেজিং না হওয়ায় গঙ্গার নিম্ন অববাহিকা জলে টইটম্বুর। এই প্রসঙ্গে তিনি সরাসরি কেন্দ্রের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবির প্রমাণ মিলেছে মঙ্গলবার বিকেল থেকেই। কলকাতার উত্তর অংশে যেখানে বৃষ্টি তুলনামূলক কম হয়েছে, সেখানে বিকেল ৪টার মধ্যে জল নেমে গেছে। মৌলালি, গিরিশ পার্কের মতো এলাকায় জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে আসে। এমনকি সোমবার রাতে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হওয়া গড়িয়াতেও জল নেমে গিয়েছে। এর জন্য রাজ্য সরকারের তৎপরতাকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী আরও অভিযোগ করেন যে ডিভিসি-র একতরফা জল ছাড়ার ফলে রাজ্যের নদী এবং খালগুলো এমনিতেই ভরে ছিল। এর সঙ্গে উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে প্রবল বৃষ্টির কারণে গঙ্গাও উপচে উঠেছে। ফারাক্কা ব্যারেজে ড্রেজিং না হওয়ার কারণে এই সমস্যা আরও বেড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, “কেন কেন্দ্রীয় সরকার ফারাক্কায় ড্রেজিং করে না?”
এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার জন্য তিনি লাগাতার ড্রেজিংয়ের সুফলকেই তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কলকাতার নিকাশী ব্যবস্থায় কোনো সমস্যা নেই। টালিনালারও ড্রেজিং করা হয়েছে। বিশ্বব্যাঙ্কের অর্থায়নে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যার জন্য ডিপিআর তৈরি হচ্ছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে বলেও তিনি জানান।
কেবল কলকাতা নয়, হাওড়া ও পার্শ্ববর্তী জেলা শহরগুলোর নিকাশী ব্যবস্থার জন্যও রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, হাওড়াতেও ডিপিআর তৈরি হচ্ছে। এছাড়াও, নিম্ন দামোদর অববাহিকায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ হয়েছে। জল সংরক্ষণের জন্য প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ পুকুর কাটা হয়েছে এবং ৫০০ চেক ড্যাম তৈরি হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।